Page 1 of 1

প্রাচীন বাংলার ইতিহাস – ১ম পর্ব

Posted: Sun Jul 24, 2022 1:56 pm
by kajol
প্রাচীন বাংলার সীমা
উত্তরে: হিমালয় পর্বত, নেপাল, ভুটান ও সিকিম রাজ্য।
দক্ষিণে: বঙ্গোপসাগর
পূর্বে: জৈন্তা পাহাড়, ত্রিপুরা-চট্রগ্রাম শৈলশ্রেণি।
পশ্চিমে: সাঁওতাল পরগণা, ছোট নাগপুর, কেওঞ্জর-ময়ূরভঞ্জের শৈলময় অরণ্যভূমি।
উত্তর-পূর্বে: ব্রহ্মপুত্র নদের উপত্যকা।
উত্তর-পশ্চিমে: বিহারের দ্বারাভাঙ্গা পর্যন্ত ভাগীরথী নদীর উত্তরেসমান্তরাল এলাকা।

ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য
ভূ-প্রাকৃতিক গঠন বৈশিষ্ট্যের আলোকে বাংলাকে ৫টি ভাগে ভাগ করা যায়- উত্তর বাংলার পাললিক সমভূমি; ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অন্তর্বতী ব-দ্বীপ; চট্টগ্রামের অনুচ্চ পার্বত্য এলাকা এবং বর্ধমান অঞ্চলের অনুচ্চ পার্বত্য এলাকা। বাংলার ভূ-প্রকৃতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নদীর। বাংলার বিস্তীর্ণ ভূভাগ নদীবাহিত পলি দ্বারা গঠিত এবং পশ্চিম, উত্তর ও পূর্ব বাংলার কিছু অংশ ছাড়া বাংলার প্রায় সবটাই ভূ-তত্ত্বের আলোকে নবসৃষ্ট।
বাঙালি জাতির উৎপত্তি
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আদিম মানব সভ্যতার যেরূপ বিবর্তন ঘটেছিল, বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। বাংলার পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে প্রাচীন ও নব্যপ্রস্তুর যুগের এবং তাম্র যুগের নিদর্শন পাওয়া গেছে। এই সকল যুগে বাংলার পার্বত্য সীমান্ত অঞ্চলে মানুষ বসবাস করত এবং ক্রমে তারা অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। বৈদিক যুগে আর্যদের সঙ্গে বাংলাবাসীর কোনোরূপ সম্পর্ক ছিল না। বৈদিক গ্রন্থাদিতে বাংলার নরনারীকে অনার্য ও অসভ্য বলা হয়েছে। এ থেকেই প্রমাণ হয় বাংলার আদিম অধিবাসীরা আর্যজাতির বংশোদ্ভূত নয়। আর্যদের আগমনের পূর্বে বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতি বসবাস করত; যথা: কোল, শবর, পুলিন্দ, ডোম, চন্ডাল ইত্যাদি। এইসব জাতিকে ‘অস্ট্রিক’ মানবগোষ্ঠীর বংশধর বলে ধরা হয়।
আনুমানিক ৫,০০০-৬,০০০ বছর পূর্বে ইন্দোচীন থেকে আসাম হয়ে এ অস্ট্রিক গোষ্ঠীর বঙ্গদেশে আগমন ঘটে। এরা দলদ্ধ হয়ে বসবাস করত। তাদের সুসংগঠিত সমাজকে কোম বলা হতো। এরা চাষাবাদ, লোহা-তামা প্রভৃতির ব্যবহার জানত। প্রাচীন এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোনো গোষ্ঠী ক্রমেই বৃহত্তর শংকর বাঙালি জাতিগোষ্ঠীর উদ্ভব ও বিস্তার ঘটায় বাংলাদেশের ভূখন্ডে। সুতরাং বাাঙালি জাতির প্রধান অংশ গড়ে উঠেছিল অস্ট্রিক বা অনার্য গোষ্ঠী থেকে।