Get on Google Play

সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য
#6924
বর্তমান বিশ্বে আলোচিত বিষয়ের নাম করোনা ভ্যাক্সিন বা টিকা । বহু দেশ তাকয়ে রয়েছে করোনা ভ্যাক্সিনের আশায় । আবার অনেক দেশ করোনা ভ্যাক্সিসের প্রয়োগ শুরু করেছে । বাংলাদেশও এ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে নেই । ২৭ জানুয়ারি ২০২১ বাংলাদেশ বিশ্বের ৫৪তম দেশ হিসেবে করোনা ভ্যাক্সিনের প্রয়োগ শুরু করে ।
ভ্যক্সিন বা টিকা কী ?
যে জৈব-রাসায়নিক মিশ্রণ দেহে Antibody তৈরি করে Immunity বা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তাকে Vaccine বা টিকা বলে । ল্যাটিন শব্দ Vacca থেকে Vaccine শব্দটির উতপত্তি হয় । ল্যাটিন ভাষায় Vacca শব্দের অর্থ হচ্ছে Cow (গরু) । টিকা মানুষের দেহকে নির্দিষ্ট কোনো একটি সংক্রমণ, ভাইরাস কিংবা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত করে ।
যেভাবে ভ্যাক্সিন আবিষ্কার
ভ্যাক্সিন চিকিৎসা দুনিয়ায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে ধরা হয় । টিকার ধারণা তৈরি হয় চীনে । দশম শতাব্দীর শুরুতে চীনারা ভ্যাক্সিনেশনের আদরূপ ভ্যারিওলেশন নামক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করে । এ প্রক্রিয়ায় গুটি বসন্তে আক্রান্তদের দেহের পাঁচড়া হতে টিস্যু নিয়ে সুস্থ মানুষদেরকে এটির সংস্পর্শে আনা হতো । তবে এটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পায়নি । ধীরে ধীরে তুরস্ক ও ইংল্যান্ডে ভ্যরিওলেশন বিস্তার লাভ করে । আট শতাব্দী পরে ব্রিটিশ চিকিৎসক এডওয়ার্ড জেনার গুটি বসন্তে অসংখ্য মানুষ মারা যাওয়া দেখে টিকা আবিষ্কারের বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন । এক পর্যায়ে ১৭৯৬ সালে সারা নেলমস নামের এক তরুণ গোয়ালিনীর দেহের গোবসন্তের তাজা ক্ষত থেকে টিকার উপাদান সংগ্রহ করেন এডওয়ার্ড জেনার । এ উপাদান দিয়ে তৈরি টিকা ১৪ মে ১৭৯৬ সর্বপ্র্যথম জেমস ফিপস নামের আট বছর বয়সী শিশুর গায়ে পুস করেন । ১ জুলাই ১৭৯৬ দ্বিতীয় ধাপে টিকা দেন এডওয়ার্ড । রোগ ভালো হয়ে যাওয়ার পর তিনি ছেলেটির দেহে গুটিবসন্তের জীবাণু প্রবেশ করান । ১৭৯৮ সালে এডওয়ার্ড জেনারের গবেষণা পত্র প্রকাশ হওয়ার পর তা ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায় । ফলে বিশ্ব প্রথম ভ্যাক্সিন বা টিকা শব্দটার সাথে পরিচিত হয় । এডওয়ার্ড জেনার গুটি বসন্তের টিকার আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি পান । ১৮৮০ সালে লুই পাস্তুর ফলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কর করেন এবং ভ্যাক্সিন জগতে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসেন ।
ভ্যক্সিনের মাধ্যমে নির্মূল রোগ
যে কোনো সংক্রামক রোগের আক্রমণ থেকে বাঁচতে ভ্যাক্সিন বা টিকার গুরুত্ব অপরিসীম । কিন্তু গেল দুই শতাব্দীতে পৃথিবী থেকে টিকার মাধ্যমে দু’টি রোগ নির্মূল হয়েছে । একটি হলো গুটি বসন্ত (Smallpox) এবং অন্যটি হলো Rinderpest যা মূলত গবাদি পশুর রোগ । এটি গরুর বসন্ত নামেও পরিচিত । ১৯৬৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ তম সম্মেলনে তৎকালীন মহাপরিচালককে গুটি বসন্ত নির্মূলের জন্য কর্মসূচি গ্রহনের অনুরোধ করা হয় । তারই ধারাবাহিকতায় ৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯ Global Comission for the Certification of Smallpox Eradication কর্মসূচির মাধ্যমে WHO বিশ্বকে গুটি বসন্ত মুক্ত ঘোষণা করে । ৮ মে ১৯৮০ WHO‘র সম্মেলনে এটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয় । আর Rinderpest নির্মূলেন ঘেষণা দেয়া হয় ২৮ জুন ২০১১ ।
ভ্যাক্সিনের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে , বর্তমানে ২৫টি রোগের তালিকা করা হয়েছে যেগুলোকে ভ্যক্সিনের মাধ্যমে প্রতিরোধ সম্ভব । এগুলো হলো -
কলেরা,ডেঙ্গু,ডিপথেরিয়া,হা, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ-বি,হেপাটাইটিস,হিউম্যান প্যাপিলেমা ভাইরাস,ইনফ্লুয়েঞ্জা,জাপানিজ এনকেফালাইটিস,মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিস,মাম্পস,ম্যালেরিয়া,পারটুসিস,নিউমোকক্কাল,পোলিও,জলাতংক,রোটাভাইরাস, ধনুষ্টংকার,টিক-বর্ণ এনকেফালাইটিই,টাইফয়েড,ভেরিসেলা,ইয়েলো ফিভার,রুবেলা,যক্ষ্মা ,অ্যান্থ্রাক্স ।
উল্লেখযোগ্য টিকার আবিষ্কারক
নাম আবিষ্কারক
গুটি বসন্ত এডওয়ার্ড জেনার (যুক্তরাজ্য)
কলেরা,জলাতঙ্ক ও অ্যান্থ্রাক্স লুই পাস্তুর (ফ্রান্স)
পোলিও জোনাস এডওয়ার্ড (যুক্তরাষ্ট্র)
খাওয়ার পোলিও আলাবর্ট সাবিন (পোলিশ-মার্কিন)
যক্ষ্মা আলবার্ট ক্যলমিটি ও ক্যামিলি গিওরিন
(ফ্রান্স)
হেপটাইটিস বি বারুচ স্যামুয়েল ব্লুমবার্গ (যুক্তরাষ্ট্র)
রুবেলা , মাম্পস মরিস হিলেম্যান (যুক্তরাষ্ট্রে)
জনক-কথা
Father of Vaccines and Immunology - এডওয়ার্ড জেনার
Father of Modern Vaccines - মরিস আর. হিলেম্যান

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]