Get on Google Play

সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য
#6981
১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানে ২৫ মার্চ আইয়ুম খান পদত্যাগ করল তার উত্তরসূরি জেনারেল ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দেন। ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ এক বেতার ভাষণে পরবর্তী নির্বাচন ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সব ধরনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে পুনরায় রাজনৈতিক তৎপরতার অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৫ অক্টোবল জাতীয় পরিষদ ও ২২ অক্টোবর প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে ৭ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। তবে কিছু অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস হওয়ায় সেসব অঞ্চলে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক ছিল নৌকা এবং নির্বাচনি কর্মসূচি ছিল ছয় দফা। এই নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের ১১১ নম্বর আসন ( ঢাকা-৮) থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং জয় লাভ করেন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদে ১৬২ আসনের মধ্যে ১৬০টি লাভ করে। যে দুটি আসনে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করতে পারেনি, সেগুলো হলো- ক. পার্বত্য রাঙ্গামাটি (চট্টগ্রাম-১০) আসনে চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় জয় লাভ করেন। এটি জাতীয় পরিষদের ১৬২ নম্বর আসন ছিল। খ. ময়মনসিংহ-৮ আসন থেকে পাস করেন নুরুল ইসলাম। সংরক্ষিত মহিলা আসনসহ আওয়ামী লীগ মোট ১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭ টি লাভ করে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। আবার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ মোট ২৮৮টি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের ১০টি সহ মোট ৩১০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ মোট ২৯৮টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। সে সময় জাতীয় পরিষদের সদস্যদের এমএনএ এবং প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের এমপিএ বলা হতো। জাতীয় ও প্রাদিশিক পরিষদে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় এ দলের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হওয়া ছিল ন্যায়সংগত। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি শুরু করে। তিনি ৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পরিষদের অধিবেশন জুলফিকার আলী ভুট্টোর প্ররোচনায় ১ মার্চ স্থগিত ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র, শ্রমিক, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী তথা সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ ফেটে পড়ে। ১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে নূরে আলম সিদ্দিকী ও শাহজাহান সিরাজ এবং ডাকসুর সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আ স ম আব্দুল কুদ্দুস মাখন- এই চার নেতা মিলে এক বৈঠকে ‘ স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ গঠন করেন। এই চার ছাত্রনেতাকে বলা হতো মুক্তিযুদ্ধের চার খলিফা। এ সংগঠনের উদ্যোগে ২ মার্চ দেশব্যাপী ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। ঐ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক ছাত্র সমাবেশে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আব্দুর রব। একাত্তরের ৩ মার্চ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আহূত পল্টন সমাবেশে ‘স্বাধীনতার ইশতেহার’ পাঠ করা হয়। স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন শাহজাহান সিরাজ। বঙ্গবন্ধু ৩ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন এবং ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর থেকে তা বেগবান হয়। বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচিগুলো ছিল- ১. কর প্রদান বন্ধ ২. সব অফিস হরতাল পালন করবে, ৩. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, ৪. বেতার-টিভি আওয়ামী লীগের সংবাদ প্রচার করবে, ৫. পরিবহণ চালু থাকবে, ৬. ব্যাংক ২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে, ৭. প্রত্যেক ভবনে কালো পতাকা উড়বে, ৮. বাংকগুলো পশ্চিম পাকিস্তানে অর্থ প্রেরণ করবে না।
১৯৭১ সালের ৩ মার্চের স্বাধীনতার ইশতেহারে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ‘জাতির পিতা’ ঘোষণা করা হয়। আন্দোলন চাঙা হয়ে উঠলে ইয়াচিয়া খান বাধ্য হয়ে ৬ মার্চ ঘোষণা করেন- ’২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসবে এবং তার আগে ১০ মার্চ ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ ঘোষণার মধ্যে ষড়যন্ত্রের আভাস লক্ষ করে দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘বাঙালির তাজা রক্ত মাড়িয়ে আমি কোনো সম্মেলনে বসতে পারি না।’
    Similar Topics
    TopicsStatisticsLast post
    1 Replies 
    1548 Views
    by Abrar

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]