- Fri Sep 11, 2020 6:18 pm#3282
ভারতের ছিটমহলগুলো ছিল বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারি, ও পঞ্চগড়ে, যা এখন বাংলাদেশের মালিকানাধীন ।
বাংলাদেশের ছিটমহলগুলো ছিল ভারতের কুচবিহারে ,যা এখন ভারতের মালিকানাধীন
কুড়িগ্রামে অবস্থিত দশিয়ারছড়া ছিটমহলের বর্তমান নাম মুজিব ইন্দিরা ইউনিয়ন।
ছিটমহল সমস্যা নিরসনে গৃহীত উদ্যোগ: ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্মলাভের মধ্য দিয়ে উদ্ভত ছিটমহল নামক সমস্যা নিরসনে ১৯৫৮ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নুরের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ,যা নেহেরু নুন চুক্তি নামে পরিচিত। ঐ চুক্তিতে বেরুবাড়ী ছিটমহল হস্তান্তরের বিষয়ে একটি ঘোষণা স্বাক্ষর করেছিলেন তারা। কিন্তু এর বিরূদ্ধে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি । এরপর পাকিস্তানের সামরিক সরকারের উদাসিনতা এবং ভারত সরকারের অনীহার কারণে এ বিষয়ে আর অগ্রগতি হয়নি। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভের পাশাপাশি উত্তরাধিকার সূত্রে ছিটমহল সমস্যাও লাভ করে । পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ও ভারতের ভেতরে থাকা ছিটমহল বিনিময়সহ সীমান্তে ভূমিসংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা সমাধানে ১৬ মে ১৯৭৪ বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে চুক্তি হয়, যা মুজিব ইন্দিরা চুক্তি নামে পরিচিত। কিন্তু ভারত তা না করায় চুক্তিটি বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর দীর্ঘদিন এ বিষয়ে অগ্রগতি না হলেও ৬ সেপ্টোম্বর ২০১১ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়নে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের ভারতের পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধনী বিল পাসে ব্যার্থ হয়। এরপর নিরঙ্কষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতার আসীন হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার। তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ-ভারত সীমন্ত চুক্তি বাসতবায়নের পথ উন্মুক্ত হয় এবং তা বাস্তবায়িত হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থলসীমান্ত চুক্তিটি ৫ মে ২০১৫ ভারতের কেন্দীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয় । এরপর ৬ মে ২০১৫ তা ভারতের রাজ্য সভায় এবং ৭ মে ২০১৫ লোকসভায় সর্বসম্মতিতে পাস হয়। পাসকৃত বিলে ভুল থাকায় ১১ মে ২০১৫ তা ভারতের রাজ্যসভায় পুনরায় উত্থাপন করা হয় । অবসান ঘটে ৪১ বছরের অচলাবস্থার । ৪১ বছর ধরে ঝুলে থাকা চুক্তিটি আলোর মুখ দেখার পাশাপাশি খুলে যায় দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে জেট লেগে থাকা ছিটমহলের সমস্যা সমাধানের পথ । ৬-৭ জুন ২০১৫ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে ৬ জুন ২০১৫ দু- দেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তি ও ২০১১ সালের অনুমোদন দলিল বিনিময় হয়। সেই মোতাবেক বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজিত ছিটমহল সমস্যারও চির অবসান ঘটে।
ছিটমহল বিনিময়: বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্য সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল হস্তান্তরের পর নির্ধারিত সময় ৩১ জুলাই ২০১৫ মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিময় হয় দুই দেশের ছিটমহল । এর মধ্য দিয়ে প্রায় সাত দশক ধরে দু দেশের ছিটমহলবাসী যে নারকীয় জীবনযাপন করেছেন তা থেকে মুক্তি লাভ করেন । ১৯৭৪ সালে স্থলসীমান্ত চুক্তি ও ২০১১সালে প্রটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল পায় ভারত। ভারতের ১১১টি ছিটমহল পায় বাংলাদেশ । এর ফলে বাংলাদেশের ভূখন্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাংলাদেশ পায় ১৭১৬০.৬৩ একর এবং ভারত পায় ৭১১০.০২ একর। জনসংখ্যা যোগ হয় বাংলাদেশে ৪০৪৭০ এবং ভারতে ১৫১৯৪ জন। ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় ছিটমহল।
অপদখলীয় জমি হস্তান্তর: অপদখলীল জমি হচ্ছে সেসব জমি , যা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। কিন্তু দেশ ভাগের পর তা পড়ে গেছে অন্য ভাগে। এক দেশের বাসিন্দা জমি পড়েছে অন্য দেশে । এসব ভূমি নিয়ে বিভিন্ন সময় দু- দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। ছিটমহল বিনিময়ের পাশাপাশি ১৯৭৪ সালের সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী অপদখলীল জমি পরস্পরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফিরে পায় ছয়টি স্থানে ২২৬৭.৬৮২ একর এবং ভারত ফিরে পায় ১২ টি স্থানে ২৭৭৭.০৩৮ একর। আর অবসান ঘটে দু-দেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
অমীমাংসিত সীমানা চিহিৃত: বাংলাদেম ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় ও অপদখলীয় জমি হস্তান্তরের পাশাপাশি ১৯৭৪ সালের সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী দু-দেশের মধ্যে ৬.৫কিলোমিটার অচিহিৃত সীমানার ৪.৫ কিলোমিটার সীমানাও চিহিৃত করা হয়। অচিহিৃত রয়ে গেছে ফেনী জেলার বিলোনিয়া সেক্টরে মুহুরীর চরের শুধু ২ কিলোমিটার সীমানা।
মশালডাঙ্গা ছিটমহলটি কুড়িগ্রাম জেলায় অবস্থিত।
বেড়ুবাড়ী ছিটমহলটি ছিল পঞ্চগড়ে।
বাংলাদেশের ছিটমহলগুলো ছিল ভারতের কুচবিহারে ,যা এখন ভারতের মালিকানাধীন
কুড়িগ্রামে অবস্থিত দশিয়ারছড়া ছিটমহলের বর্তমান নাম মুজিব ইন্দিরা ইউনিয়ন।
ছিটমহল সমস্যা নিরসনে গৃহীত উদ্যোগ: ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্মলাভের মধ্য দিয়ে উদ্ভত ছিটমহল নামক সমস্যা নিরসনে ১৯৫৮ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নুরের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ,যা নেহেরু নুন চুক্তি নামে পরিচিত। ঐ চুক্তিতে বেরুবাড়ী ছিটমহল হস্তান্তরের বিষয়ে একটি ঘোষণা স্বাক্ষর করেছিলেন তারা। কিন্তু এর বিরূদ্ধে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি । এরপর পাকিস্তানের সামরিক সরকারের উদাসিনতা এবং ভারত সরকারের অনীহার কারণে এ বিষয়ে আর অগ্রগতি হয়নি। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভের পাশাপাশি উত্তরাধিকার সূত্রে ছিটমহল সমস্যাও লাভ করে । পরবর্তীকালে বাংলাদেশ ও ভারতের ভেতরে থাকা ছিটমহল বিনিময়সহ সীমান্তে ভূমিসংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা সমাধানে ১৬ মে ১৯৭৪ বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে চুক্তি হয়, যা মুজিব ইন্দিরা চুক্তি নামে পরিচিত। কিন্তু ভারত তা না করায় চুক্তিটি বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর দীর্ঘদিন এ বিষয়ে অগ্রগতি না হলেও ৬ সেপ্টোম্বর ২০১১ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তির প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়নে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের ভারতের পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধনী বিল পাসে ব্যার্থ হয়। এরপর নিরঙ্কষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতার আসীন হয় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার। তার সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ-ভারত সীমন্ত চুক্তি বাসতবায়নের পথ উন্মুক্ত হয় এবং তা বাস্তবায়িত হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থলসীমান্ত চুক্তিটি ৫ মে ২০১৫ ভারতের কেন্দীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয় । এরপর ৬ মে ২০১৫ তা ভারতের রাজ্য সভায় এবং ৭ মে ২০১৫ লোকসভায় সর্বসম্মতিতে পাস হয়। পাসকৃত বিলে ভুল থাকায় ১১ মে ২০১৫ তা ভারতের রাজ্যসভায় পুনরায় উত্থাপন করা হয় । অবসান ঘটে ৪১ বছরের অচলাবস্থার । ৪১ বছর ধরে ঝুলে থাকা চুক্তিটি আলোর মুখ দেখার পাশাপাশি খুলে যায় দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে জেট লেগে থাকা ছিটমহলের সমস্যা সমাধানের পথ । ৬-৭ জুন ২০১৫ ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে ৬ জুন ২০১৫ দু- দেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তি ও ২০১১ সালের অনুমোদন দলিল বিনিময় হয়। সেই মোতাবেক বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজিত ছিটমহল সমস্যারও চির অবসান ঘটে।
ছিটমহল বিনিময়: বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্য সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল হস্তান্তরের পর নির্ধারিত সময় ৩১ জুলাই ২০১৫ মধ্যরাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিময় হয় দুই দেশের ছিটমহল । এর মধ্য দিয়ে প্রায় সাত দশক ধরে দু দেশের ছিটমহলবাসী যে নারকীয় জীবনযাপন করেছেন তা থেকে মুক্তি লাভ করেন । ১৯৭৪ সালে স্থলসীমান্ত চুক্তি ও ২০১১সালে প্রটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল পায় ভারত। ভারতের ১১১টি ছিটমহল পায় বাংলাদেশ । এর ফলে বাংলাদেশের ভূখন্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। বাংলাদেশ পায় ১৭১৬০.৬৩ একর এবং ভারত পায় ৭১১০.০২ একর। জনসংখ্যা যোগ হয় বাংলাদেশে ৪০৪৭০ এবং ভারতে ১৫১৯৪ জন। ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় ছিটমহল।
অপদখলীয় জমি হস্তান্তর: অপদখলীল জমি হচ্ছে সেসব জমি , যা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। কিন্তু দেশ ভাগের পর তা পড়ে গেছে অন্য ভাগে। এক দেশের বাসিন্দা জমি পড়েছে অন্য দেশে । এসব ভূমি নিয়ে বিভিন্ন সময় দু- দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। ছিটমহল বিনিময়ের পাশাপাশি ১৯৭৪ সালের সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী অপদখলীল জমি পরস্পরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফিরে পায় ছয়টি স্থানে ২২৬৭.৬৮২ একর এবং ভারত ফিরে পায় ১২ টি স্থানে ২৭৭৭.০৩৮ একর। আর অবসান ঘটে দু-দেশের মধ্যে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
অমীমাংসিত সীমানা চিহিৃত: বাংলাদেম ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় ও অপদখলীয় জমি হস্তান্তরের পাশাপাশি ১৯৭৪ সালের সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী দু-দেশের মধ্যে ৬.৫কিলোমিটার অচিহিৃত সীমানার ৪.৫ কিলোমিটার সীমানাও চিহিৃত করা হয়। অচিহিৃত রয়ে গেছে ফেনী জেলার বিলোনিয়া সেক্টরে মুহুরীর চরের শুধু ২ কিলোমিটার সীমানা।
মশালডাঙ্গা ছিটমহলটি কুড়িগ্রাম জেলায় অবস্থিত।
বেড়ুবাড়ী ছিটমহলটি ছিল পঞ্চগড়ে।