Get on Google Play

সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য
#2443
আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার মরু অঞ্চলের দেশগুলোতে বছরে বৃষ্টিপাত হয় আট ইঞ্চিরও কম। ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘হর্ন অব আফ্রিকার দেশগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০০ সেমি বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। মরু অঞ্চলে এ অতি বৃষ্টির কারণে পঙ্গপালের ব্যাপক বংশবিস্তার ঘটে। ফলে আফ্রিকা থেকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে এশিয়ার দেশেগুলো পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে পঙ্গপাল। কয়েক মাসের মধ্যে দুটি মহাদেশ মিলিয়ে ৬০টি দেশে দেখা যাচ্ছে এদের বিস্তার। কয়েক মাস আগে পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতে লাখ লাখ একর জমিতে হানা দেয় এসব পঙ্গপাল। কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়া এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। সেই সাথে আফ্রিকার আরও ১৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে এ পঙ্গপাল। লোহিত সাগরের দুই পাড়েও সমানতালে বাড়ছে এদের আধিপত্য। সুদান, মিসরের উপকূল থেকে শুরু করে দক্ষিণ-পশ্চিম সৌদি আরবেও চলছে বংশবিস্তার। ওমানের পূর্ব উপকূল থেকে শুরু করে ভারত-পাকিস্তান পর্যন্ত পৌঁছেছে তারা। সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ায় গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় মহামারী আকার ধারণ করেছে পঙ্গপালের বিস্তার। আর কেনিয়াতে ৭০ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
পঙ্গ মূলত ঝিঁঝিপোকার মতো দেখতে এক ধরনের ছোট পতঙ্গ। এটি আর্কিডিডি পরিবারের ছোট শিংয়ের বিশেষ প্রজাতি, যাদের জীবনচক্রে দল বা ঝাঁক বেঁধে থাকার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ পঙ্গগুলো সাধারণত একা থাকে। তবে বিশেষ অবস্থায় তারা একত্রে জড়ো হয়। পঙ্গপাল প্রধানত আধা শুকনো ও আধা-মরুভূমি আবহাওয়ায় থাকে। বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অকালবৃষ্টি এবং বার বার সাইক্লোনের জন্য এদের ব্যাপক উপদ্রপ লক্ষ্য করা যায়। ২০০ মিলিমিটারের কম বৃষ্টি হয়, নিকট প্রাচ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার এমন দেশগুলোতে এ পতঙ্গের দেখা পাওয়া যায়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) তথ্য অনুযায়ী, এক কোটি ৬০ লাখ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এ অঞ্চলের ৩০টি দেশে এদের অস্তিত্ব রয়েছে। মরুপতঙ্গদের জীবনকাল মাত্র তিন মাস। জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যেই এরা পূর্ণবয়স্ক হয়ে ওঠে এবং এক মাসের মধ্যেই ডিম পাড়তে সক্ষম হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যেই এদের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। তিন মাসের মধ্যেই মরুপতঙ্গরা তাদের সংখ্যা ২০ গুণ বৃদ্ধি করে ফেলতে সক্ষম। প্রয়োজনীয় বৃষ্টি আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এরা ছয় মাসের মধ্যে, ৪০০ গুণ, আর নয় মাসের মধ্যে ৮,০০০ গুণ বেড়ে যেতে পারে।
দৈনিক প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারে এসব মরুপতঙ্গ। আর এভাবেই চলে যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে। পঙ্গপালের হানায় মুহূর্তেই বিলীন হয়ে যেতে পারে বিশাল আকারের ফসলি জমি। পতঙ্গদের এক কিলোমিটার বিস্তৃত একটি পাল এক দিনে ৩৫,০০০ মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্য সাবাড় করতে সক্ষম। জাতিসংঘের মতে, প্রতিটি পঙ্গপালের ঝাঁকে থাকে ১৫ কোটিরও বেশি পতঙ্গ। একটি ঝাঁক এক বর্গকিলোমিটার এলাকা বা ২৫০টি ফুটবল মাঠের সমান জায়গা দখল করে থাকে।
    Similar Topics

    ১.বাংলাদেশে কত প্রজাতির ইলিশ মাছ পাওয়া যায়? বাংল[…]

    ১.এক কোটিতে কত মিলিয়ন হয়?-উঃ ১০ মিলিয়ন। ২. ৫০ ট[…]