- Tue Mar 03, 2020 9:07 pm#2382
জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাস
রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘে। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৩৪টি দেশ, বিপক্ষে ছিল নয়টি দেশ। আর ভোট দেয়নি ২৮টি দেশ। ২৫ আগস্ট ২০১৭ রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ নিয়ে তিনটি প্রস্তাব পাস হয় সাধারণ পরিষদে।
রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ ICOE’ র প্রতিবেদন
রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্ত করতে ফিলিপাইনের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী রোজারিও মালানোর নেতৃত্বে ৩০ জুলাই ২০১৮ ইন্ডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারি (ICOE) নামে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করেছিল মিয়ানমার সরকার। ২০ জানুয়ারি ২০২০ কমিশন এ সংক্রান্ত ৪৬১ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন তুলে দেয় দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের হাতে। প্রতিবেদনে তথাকথিত এ ‘স্বাধীন কমিশন’ মন্তব্য করে যে, মিয়ানমারের রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তবে সেখানে কোনো ধরনের গণহত্যার আলামত পাওয়া যায়নি।
গণহত্যা বন্ধে ICJ’ র নির্দেশ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি সেনা তল্লাশি চৌকিতে কথিত সন্ত্রাসী হামলার জবাবে দেশটির সেনাবাহিনী (তাতামাদও) ২৫ আগস্ট ২০১৭ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত নিধন অভিযান শুরু করে। সে সময় ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার অভিযোগ, এ অভিযানে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর ২০১৯ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা করে আফ্রিকার ছোট দেশ গাম্বিয়া। ১০-১২ ডিসেম্বর ২০১৯ এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবুবকর মারি তাম্বাদু। গাম্বিয়াকে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সহায়তা করে বাংলাদেশ, কানাডা ও নেদারল্যান্ডস। শুনানিকালে গণহত্যার তদন্ত শুরু না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানায় গাম্বিয়া। অন্যদিকে এ মামলা লড়তে আদালতে হাজির হয়েছিলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।
তিনি রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন। একই সাথে এ মামলার শুনানি করতে আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই বলে দাবি করেন তিনি। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর ICJ’ র ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেল বিষয়টি আদেমের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। আদালতের আনুষ্ঠানিক অধিবেশনে ICJ’ র প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুলকোয়াই আহমেদ ইউসুফ আনুষ্ঠানিকভাবে এ আদেশ ঘোষণা করেন। ২৫ পৃষ্ঠার এ লিখিত আদেশের শুরুতে আদালত গণহত্যা সনদের আলোকে গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের বিরোধ মিষ্পত্তিতে আদালতের এখতিয়ারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন। এরপর মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যা থেকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে চার দফা নির্দেশ দেন। ICJ’ র বিচারপতিরা সর্বসম্মতভাবে ঐতিহাসিক এ আদেশ দেন। মিয়ানমার ICJ’ র এ রায় মেনে চলতে বাধ্য। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের কোনো সুযোগ নেই।
কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চললেও এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক আদালত মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আদেশ দিলেন।
অন্তবর্তী ৪ নির্দেশ
• গণহত্যা সনদ অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের হত্যাসহ সব ধরনের নিপীড়ন থেকে নিবৃত্ত থাকতে হবে।
• সেনাবাহিনী বা অন্য কেউ যাতে গণহত্যা সংঘটন, ষড়যন্ত্র বা উসকানি দিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
• গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ রক্ষা করতে হবে।
• চার মাসের মধ্যে আদেশ অনুযায়ী, মিয়ানমার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা আদালতকে জানাতে হবে।
রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘে। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৩৪টি দেশ, বিপক্ষে ছিল নয়টি দেশ। আর ভোট দেয়নি ২৮টি দেশ। ২৫ আগস্ট ২০১৭ রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ নিয়ে তিনটি প্রস্তাব পাস হয় সাধারণ পরিষদে।
রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ ICOE’ র প্রতিবেদন
রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্ত করতে ফিলিপাইনের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী রোজারিও মালানোর নেতৃত্বে ৩০ জুলাই ২০১৮ ইন্ডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারি (ICOE) নামে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করেছিল মিয়ানমার সরকার। ২০ জানুয়ারি ২০২০ কমিশন এ সংক্রান্ত ৪৬১ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন তুলে দেয় দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের হাতে। প্রতিবেদনে তথাকথিত এ ‘স্বাধীন কমিশন’ মন্তব্য করে যে, মিয়ানমারের রাখাইনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তবে সেখানে কোনো ধরনের গণহত্যার আলামত পাওয়া যায়নি।
গণহত্যা বন্ধে ICJ’ র নির্দেশ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি সেনা তল্লাশি চৌকিতে কথিত সন্ত্রাসী হামলার জবাবে দেশটির সেনাবাহিনী (তাতামাদও) ২৫ আগস্ট ২০১৭ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত নিধন অভিযান শুরু করে। সে সময় ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার অভিযোগ, এ অভিযানে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর ২০১৯ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা করে আফ্রিকার ছোট দেশ গাম্বিয়া। ১০-১২ ডিসেম্বর ২০১৯ এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল আবুবকর মারি তাম্বাদু। গাম্বিয়াকে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সহায়তা করে বাংলাদেশ, কানাডা ও নেদারল্যান্ডস। শুনানিকালে গণহত্যার তদন্ত শুরু না হওয়া পর্যন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানায় গাম্বিয়া। অন্যদিকে এ মামলা লড়তে আদালতে হাজির হয়েছিলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।
তিনি রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন। একই সাথে এ মামলার শুনানি করতে আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই বলে দাবি করেন তিনি। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনার পর ICJ’ র ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেল বিষয়টি আদেমের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ২৩ জানুয়ারি ২০২০ ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। আদালতের আনুষ্ঠানিক অধিবেশনে ICJ’ র প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুলকোয়াই আহমেদ ইউসুফ আনুষ্ঠানিকভাবে এ আদেশ ঘোষণা করেন। ২৫ পৃষ্ঠার এ লিখিত আদেশের শুরুতে আদালত গণহত্যা সনদের আলোকে গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের বিরোধ মিষ্পত্তিতে আদালতের এখতিয়ারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন। এরপর মিয়ানমারের রাখাইনে গণহত্যা থেকে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে চার দফা নির্দেশ দেন। ICJ’ র বিচারপতিরা সর্বসম্মতভাবে ঐতিহাসিক এ আদেশ দেন। মিয়ানমার ICJ’ র এ রায় মেনে চলতে বাধ্য। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের কোনো সুযোগ নেই।
কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চললেও এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক আদালত মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আদেশ দিলেন।
অন্তবর্তী ৪ নির্দেশ
• গণহত্যা সনদ অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের হত্যাসহ সব ধরনের নিপীড়ন থেকে নিবৃত্ত থাকতে হবে।
• সেনাবাহিনী বা অন্য কেউ যাতে গণহত্যা সংঘটন, ষড়যন্ত্র বা উসকানি দিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
• গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ রক্ষা করতে হবে।
• চার মাসের মধ্যে আদেশ অনুযায়ী, মিয়ানমার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা আদালতকে জানাতে হবে।