Get on Google Play

সাধারণ জ্ঞান বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য
#1842
১৭৫৭ সালে ব্রিটিশদের নিকট বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন এবং ১৮৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে বাংলার নবাব,মোগল সম্রাট শাহ আলম কতৃক সম্মিলিত ভারতীয় জোট, ব্রিটিশদের নিকট পরাজয়ের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতার সূর্য দীর্ঘ দুই শতাব্দীর জন্যে অস্তমিত হয়ে যায়।

ভারতে মুসলিম শাসনের পতনের পর ব্রিটিশ শাসনের সূত্রপাত হয়, যা ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।

ভারতীয়দের মাঝে মুসলমিরা স্বভাবজাত ভাবেই মুসলিম শাসনকালকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিল কিন্তু ব্রিটিশ শাসনকে তারা সহজে গ্রহন করতে পারেনি। ফলে ব্রিটিশদের উত্থানের ফলে ভারতীয় মুসলমানরা শিক্ষা,সংস্কৃতি এবং অর্থনীতি সহ সবদিক দিয়ে অনেকটা পিছিয়ে পড়ছিল।

অপরদিকে, তৎকালীন সময়ে কিছুসংখ্যক হিন্দুজনতা মুসলিম শাসনকে স্বাগত জানালেও অধিকাংশ গোড়া থেকে এর বিরোধিতা করে আসছিল।ফলশ্রুতিতে তাঁরা ব্রিটিশ শাসনকে মেনে নেয় এবং সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে থাকে।কিন্তু ইতিমধ্যে ব্রিটিশ শাসনের তিক্ততার স্বাদ সমগ্র ভারতবাসী অর্থাৎ মুসলিম ও হিন্দু গ্রহণ করা শুরু করলে অচিরেই যেই হিন্দুরা ব্রিটিশ শাসনকে স্বাগত জানিয়েছিল, তারাই তাদের বিরোধিতা করতে থাকে।হয়ত তাদের মনের মাধুরীতে মিশে ছিল একটি আপসোস “ব্রিটিশদের চেয়ে মুসলমি শাসকরাই ভাল ছিল!!!

"কেননা ব্রিটিশরা ছিল ব্যবসায়ী, নেপোলিয়নের ভাষায় তারা ছিল " A nation of shopkeepers, অর্থাৎ দোকানদারের জাতী, অপরিদকে মুসলমানরা নিজেদের শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ছিল।এই মর্মে আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি ইতিপূর্বের সকল হিন্দু শাসক এবং ব্রিটিশদের চেয়ে, কতিপয় শাসক ব্যাতিত মুসলিম শাসকরা সর্বশ্রেষ্ঠ এবং মহৎ ছিল।

কাশ্মীরিদের বর্তমান দুঃখ দুর্দশার অন্তরায় ছিল এই ব্রিটিশ জাতী। ১৮৬৪ সালে শিখ রাজা রণজিৎ সিংকে পরাজয় করার মধ্যদিয়ে কাশ্মীর দখল সহ ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময়পর্যন্ত ব্রিটিশদের কিছু ভুল পদেক্ষেপ গ্রহণের কারণেই বর্তমানে কাশ্মীরের মুসলমানরা নিরাপত্তাহীনতায় এবং আত্মপরিচয়হীনতায় ভোগছে। কাশ্মীরের শিখ শাসকদের পরাজিত করার কিছুদিন পর ,

১৮৬৪ সালের ১৬ মার্চ সমসাময়িক জম্মুর রাজা গোলাপ সিংকে “ অমৃতস্বর” চুক্তির মাধ্যমে ৭৫ লাখ টাকার বিনিময়ে কাম্মীর বিক্রি করে দেয় ব্রিটিশ সরকার। ফলে গোলাপ সিং জম্মু ও কাশ্মীরের মহারাজ উপাধি লাভ করে। সেই সময় থেকে কাশ্মীর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মর্যদা ভোগ করে আসছিল যা ৫ আগস্ট ২০১৯ সালে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার বাকিল করে কাশ্মিরের মুসলমানদের অধিকার হরণ করে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের আগ পর্যন্ত হিন্দু রাজাদের অধীনে কাশ্মীর শাসিত হয়ে আসছে এবং শেষ রাজা ছিল হরি সিং।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের(১৯৩৯-১৯৪৫ সাল) শেষের দিকে পৃথিবীর সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো উপনিবেশ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে “ব্রিটিশ হটা্ও”আন্দোলন শুরু হয়, এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই ব্রিটিশ সরকার কতৃক “ভারত স্বাধীনতা আইন পাশ করা হয়।এই আইন দ্বারা সুদীর্ঘ ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে এবং একই সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান ও ১৫ আগস্ট ভারত নামের দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।

উপরন্তু ব্রিটিশরা যখন উপমহদেশ ছেড়ে চলে ছেড়ে যায় , তখন উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে মহারাজ ছিল ৫৬২ জন। তাদের অধীনে ছিল এক একটি প্রিন্সলি স্টেইট । জম্মু আ্যন্ড কাশ্মীর ছিল বৃহত্তর প্রিন্সলি স্টেট।এর শাসক ছিলেন হরি সিং।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় শর্ত ছিল, এসব প্রিন্সলি স্টেট ভারত অথবা পাকিস্তান যে কোন অংশে যোগ দিবে। জম্মু আ্যন্ড কাশ্মীর(হিন্দু রাজা শাসিত), জুনগড়(মুসলিম রাজা শাসিত), হায়াদরাবাদ(মুসলিম রাজা শাসিত) এই তিনটি রাজ্য ছাড়া বাকি সব রাজ্য পাকিস্তান কিংবা ভারতে যোগদান করে। অপরদিকে উক্ত রাজ্য তিনটি স্বাধীন থাকতে চেয়ে ও ব্যার্থ হয়।

জুনগড় এবং হায়াদরাবাদ ভারতের ভিতরে থাকার ফলে মুসলমান শাসিত রাজ্য হওয়ার সত্যেও রাজ্য দুইটি ভারতের ভিতরে বিলীন হয়।অপরদিকে জম্মু আ্যান্ড কাশ্মীরের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা ছিল মুসলিম(৮৫%) কিন্তু রাজা ছিল হিন্দু,অবস্থান ছিল ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝখানে। রাজ্যটির ভূরাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক

গুরুত্ব ও ছিল অসীম। সুতরাং কাশ্মীর সমস্যার মূল নিহিত সেখানেই।

স্বাধীনতা “ শব্দটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে এক বিস্তীর্ণ ইতিহাস। অসংখ্য মানুষের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে লিপিবদ্ধ করা হয় স্বাধীনতার প্রতিটি বর্ণমালা। পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ অপশাসন ও শোষণের অন্তিমকালে ধর্মের ভিত্তিতে যথাক্রমে ১৪ আগস্ট পাকিস্তান এবং ১৫ আগস্ট ভারত নামের দুইটি স্বাধীন রাষ্টের উদ্ভব হয়। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার মুসলিম প্রজা অধ্যুষিত এবং হিন্দু রাজা শাসিত কাশ্মিরের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারেনি। তখন কাশ্মির ছিল ব্রিটিশ সরকারের একটি বৃহত্তর প্রিন্সলি স্টেট এবং রাজা ছিলেন “হরি সিং”

সমসাময়িক কাশ্মীরে ৮০ ভাগ লোক মুসলমান হ্ওয়ায় নীতিগত ভাবে কাশ্মির পাকিস্তানের প্রাপ্য হ্ওয়া

সত্ত্বে ও (পাকিস্তান মনে করে) তৎকালীন ভারতের(প্রথম) গভর্নর জেনারেল মাউন্টব্যাটন এবং প্রধানমন্ত্রী জ্ওহরলাল নেহরু তা হতে দেননি।অতঃপর কাশ্মীর বিষয়ে পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও নেহেরু নিজেদের মতের ব্যার্থ হলে কৈাশলগতভাবে ‘১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট কাশ্মির স্বাধীন হয়ে যায়। যদি্ও ইতিপূর্বে হরিসিং কাশ্মিরকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্টা করতে জিন্নাহ ও নেহরুর সাথে আলোচনা করে ও ব্যার্থ হয়েছিলেন।

১৫ আগস্ট কাশ্মির স্বাধীনতা লাভ করলেও হিন্দু শাসক এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগণ ইত্যাদি দ্বন্দের ফলে মাত্র ৭১ দিন পর সেই স্বাধীনতার সূর্য ‌অস্তমিত হয়।

১৯৪৭ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে কাশ্মীরের ইসলামি জাতীয়তাবাদি এবং স্বাধীনতাকামি দলগুলো পাকিস্তানের সহয়তায় হিন্দু রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। নিরুপায় হয়ে রাজা হরিসিং ভারতবন্ধু নামে কথিত “শেখ আব্দুল্লাহর পরামর্শে ভারতের সামরিক সাহায্য কামনা করে। কিন্তু ভারত সরকার কাশ্মীরকে ভারতের সাথে একিভূত হ্ওয়ার শর্তে সহায়তা প্রধান করতে রাজি হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৭ সালের ২৪ অক্টোবর ভারত কাশ্মিরে হস্তক্ষেপ করলে ২৪-২৭ শে অক্টোবর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধের ফলে ভারত কাশ্মীরের দুই তৃতীয়াংশ (জম্মু এবং কাশ্মির) ,পাকিস্তান এক তৃতীয়াংশ ( আজাদ বা মুক্ত কাশ্মীর) দখল করে। অবশেষে ১৯৪৭ সালের ১ লা জানুয়ারি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যস্ততায় যুদ্ধ বিরতি কাযর‌্কর হয। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রশাসনিক প্রধান

হিসেবে নেহেরু তার বন্ধু শেখ আবদুল্লাহকে নিয়োগ প্রধান করে। অতঃপর তিনি ১৯৪৯ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তার দল ন্যাশনাল কংগ্রেসের মাধ্যমে কাশ্মির শাসন করেতে থাকেন।

পরবর্তীতৈ কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামিদের আন্দোলনের ফলে উক্ত অঞ্চলে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হলে অবশেষে জাতিসংঘের নিারাপত্তা পরিষদ একটি উদ্যেগ গ্রহণ করে।১৯৪৮ সালের ১৩ আগস্ট এবং ১৯৪৯ সালের ৫ জানুয়ারি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উদ্যেগে গঠিত শান্তি কমিশনে , ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই কাশ্মিরের ভবিষ্যৎ সেখানকার জনগণের মতামতের( রেফারন্ডম বা গণভোটের) এর উপর নির্ভর করবে বলে সম্মত হয়।

কিন্তু ভারত কাশ্মিরের জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে ১৯৫৭ সালের ২৩ মে দেশটির সংবিধানে একটি সংশোধন আনায়ন করে।সেই সংশোধনীর ১ নং ধারায় “ কাশ্মিরকে ভারতের একটি

অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তুলনা করে এবং ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী “ কাশ্মীরে সেনা মোতায়ন করা হয়।

যা সংকটকে আর ও তীব্রতর করে তোলে এমনকি ভারতের এই আগ্রাসি ভূমিকার ফলেই ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সূচনা হয় ।

১৭ দিন ব্যাপি চলা এ যুদ্ধে ভারত পাকিস্তানের কারগিলের দু্ইটি ঘাটি দখল করে নেয়। পরবর্তীতে তৎকালিন

সোভিয়ত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী ‘কোসিগালের” আমন্ত্রনে সমসাময়িক ভারতের প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী

এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুবখান তাসখন্দে মিলিত হয়ে তাসখন্দ চুক্তি সাক্ষর করে ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি।তাসখন্দ চুক্তি অনুযায়ী , ভারত পাকিস্তানের দখলকৃত ঘাটি পাকিস্তানকে ফিরিযে দেয় এবং দুই দেশের সেনাবাহিনী আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

Collected
    Similar Topics
    TopicsStatisticsLast post
    0 Replies 
    356 Views
    by sajib
    0 Replies 
    813 Views
    by rajib
    0 Replies 
    203 Views
    by kajol
    0 Replies 
    191 Views
    by tasnima
    0 Replies 
    197 Views
    by mousumi

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]