Get on Google Play

খেলাধুলা বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান
#2001
[এই লেখাটি সম্পূর্ণ পড়লে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আপাতত বাংলাদেশের টেষ্ট ক্রিকেট সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন আসলে পারা যাবে ইনশাআল্লাহ্!]

======================================

২০০০ সালের ২৬ জুন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ সদস্যের মর্যাদা লাভ করে। বোর্ডের নাম পরিবর্তিত হয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নামকরণ হয়। ১০-১৩ নভেম্বর, ২০০০ সালে বাংলাদেশ দল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী টেস্টে ভারতের মুখোমুখি হয়। খেলায় ভারত দল নয় উইকেটে জয় পায়।

হ্যাঁ আজ ঐতিহাসিক সেই ১০ নভেম্বর, ২০০০ সাল। এক মাহেন্দ্রক্ষণে বহু দিনের লালিত স্বপ্ন, স্বাধীনতা পাওয়ার মত আনন্দে বিভোর হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ প্রবেশ করে। প্রায় দুই দশকে পা রাখা টাইগাররা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সমীহ জাগানো অবস্থানে যেতে পারলেও টেস্টে এখনও তা পুরোপুরি সম্ভব হয়নি৷ তবে সাদা পোশাকে বারবার বিশ্বকে জানান দিয়েছে নিজেদের ক্ষমতার, রেকর্ড গড়ে নিজেদের জাত চিনিয়েছে টাইগাররা৷ স্মরণীয় করে রাখতে জিতেছে নিজেদের খেলা শততম (শ্রীলংকার বিরুদ্ধে) টেস্টটিও.....

সেদিন ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ৷ প্রতিপক্ষ ছিল ভারত৷ আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটকে চমকে দিয়ে অভিষেক ইনিংসেই করেছিল ৪০০ রান। টেস্ট অভিষেকে দলীয় সর্বোচ্চ রানের স্কোরটা জিম্বাবুয়ের (৪৫৬) রান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহটা বাংলাদেশের (৪০০)। বাংলাদেশের পক্ষে আমিনুল ইসলাম বুলবুল করেছিলেন ১৪৫ রান৷ কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে সেই সাফল্য ধরে রাখা যায়নি৷ ফলে মাত্র ৯১ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল টেস্ট ক্রিকেটের আঁতুর ঘরে থাকা দলটি৷

সেদিন সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে প্রথম টেস্টে টস করতে নেমেছিলেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়।টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রথম রানটি এসেছিল শাহরিয়ার হোসেনের ব্যাট থেকে। প্রথম বাউন্ডারিটি শাহরিয়ারের কাছ থেকে আসলেও সেদিন আকরাম খানের ব্যাট থেকে আসে প্রথম ছক্কাটি। প্রথম অর্ধশতকের মালিক হাবিবুল বাশার সুমন। অভিষেক টেস্টে ১১২ বলে ১০টি বাউন্ডারিতে তিনি করেছিলেন ৭১ রান।

প্রথম টেস্ট ম্যাচেই আমিনুল ইসলাম বুলবুল ১৪৫ রান করেছিলেন৷ তার ৫৩৫ মিনিটের দীর্ঘ এই ইনিংসে ছিল ১৭টি চারের মার। ৩৮০টি বল মোকাবেলা করে বুলবুল তার ইনিংসটি সাজান। তিনি ছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের তৃতীয় ক্রিকেটার, যিনি দেশের অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করেন।

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম বলটি করেছিলেন হাসিবুল হোসেন। অভিষেক টেস্টে তিনি প্রথম বলটি করেছিলেন ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শিবশঙ্কর দাশকে। ভারতের শিবশঙ্কর দাশকে বোল্ড করেছিলেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। অভিষেক টেস্টে অধিনায়ক নাঈমুর রহমান তার অফ স্পিনে ৪৪.৩ ওভার থেকে ১৩২ রান খরচায় নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। আর টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম পেসার হিসেবে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন মঞ্জুরুল ইসলাম। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়েতে ৬ উইকেট শিকার করেছিলেন ৮১ রানের বিনিময়ে।

টেষ্ট ইতিহাস পর্যালোচনা করেই আমরা পেয়েছি সোহাগ গাজীর বিরল রেকর্ড, বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার যিনি এক ম্যাচে সেঞ্চুরির পাশাপাশি হ্যাটট্রিকও করেন৷ ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পাশাপাশি তিনি হ্যাটট্রিক করেন। এছাড়সও পেয়েছি মেহেদি হাসান মিরাজের মত একজন খেলোয়াড়, যিনি ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে অভিষেক করেন এবং অভিষেক ম্যাচেই তুলে নেন ১৯ উইকেট৷ এর চেয়ে বেশি উইকেট নেয়া (অভিষেকে ও দুই টেস্টের সিরিজে) আর কোনো ক্রিকেটার বিশ্বে নেই৷

সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে উঠে এসেছে বাংলাদেশ বনাম ভারতের ম্যাচের জনপ্রিয়তা (আগে ছিল পাক-ভারত)। দীর্ঘদিন ধরে খেলা ভারতের কাছে অভিজ্ঞতার বিচারে আমরা শিশু হলেও একদিন ভারতকেই আমরা ছাপিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ!

১৯৩২ সালে ভারত প্রথম টেস্ট মর্যাদা পেলেও আমরা পেয়েছি ২০০০ সালে। প্রথম টেষ্ট ভারতের জিততে ২০বছর সময় (১৯৫২ সাল) লাগলেও আমাদের লেগেছে মাত্র ৫ বছর (জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে, ১০ জানুয়ারী, ২০০৫ সালে)। টেষ্ট মর্যাদা পাওয়ার ১২ বছরের মাথায় ২০১২ সালে আমরা পেয়েছি টেষ্টে ডাবল সেঞ্চুরী, অথচ ভারত এই ডাবল সেঞ্চুরী পেয়েছে ১৯৬৪ সালে। আবার ওয়ান ডে ক্রিকেটের কথা যদি ধরি তবে ভারত ওয়ান ডে ক্রিকেটের মর্যাদা পেয়েছিল ১৯৭১ সালে, সেখানে আমরা পেয়েছি ১৯৯৯ সালে। ভারত প্রথম ওয়ান ডে জয়লাভ করে মর্যাদা পাওয়ার ৮ বছর পর ১৯৭৯ সালে। অন্যদিকে ওয়ান ডে মর্যাদা পাওয়ার মাত্র ১ বছর পরেই আমরা প্রথম ওয়ান ডে জয়লাভ করি ১৯৯৮ সালে।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, অদূর ভবিষ্যতে ভারতের ক্রিকেটের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রথম টেষ্ট ক্রিকেট দলকে সংবর্ধনা দিতে যাচ্ছে ভারত সেটি কিন্তু তারা ভুল করছে না........ 😇😇😇

👉👉👉 বাংলাদেশের টেষ্ট ক্রিকেট সম্পর্কে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় যেসব প্রশ্ন আসতে পারে-

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ
=================
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট খেলার মর্যাদা লাভ করে কবে?
উত্তরঃ ২৬ জুন ২০০০সালে।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটের কত তম সদস্য?
উত্তরঃ দশম ।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশ কোন দলের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলে?
উত্তরঃ ভারত; ১০-১৪ নভেম্বর ২০০০ (ঢাকায়) ।
👉প্রশ্নঃ টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান কে?
উত্তরঃ আমিনুল ইসলাম বুলবুল ।
👉প্রশ্নঃ অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের অধিনায়ক কে ছিল?
উত্তরঃ নাঈমুর রহমান দুর্যয় ।
👉প্রশ্নঃ কবে কোন দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট ম্যাচ জয়লাভ করে?
উত্তরঃ ৬-১০ জনুয়ারী ২০০৫ ,জিম্বাবুয়ে ।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশ নিজস্ব কত তম টেস্টে প্রথম জয় পায়?
উত্তরঃ ৩৫ তম ।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশ নিজস্ব কত তম টেস্টে দ্বীতিয় জয় পায়?
উত্তরঃ ৬০ তম টেস্টে ।
👉প্রশ্নঃ কবে, কোন দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তৃতীয় টেস্ট ম্যাচ জয়লাভ করে?
উত্তরঃ ১৭-২০ জুলাই ২০০৯, ওয়েস্টইন্ডিজ ।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশ কবে কোন দেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় করে?
উত্তরঃ ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে(১-০) ।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশ বিদেশের মাটিতে কবে, কোন দেশের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট জয় করে?
উত্তরঃ ৯-১৩ জুলাই ২০০৯; ওয়েস্টইন্ডিজের বিরুদ্ধে’ সিরিজটিও জয় করেছিল বাংলাদেশ ।
👉প্রশ্নঃ টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম হ্যাট্রিক কারী কে?
উত্তরঃ অলক কাপালি (২৯ আগস্ট২০০৩ পাকিস্তান)

উল্লেখ্য , তিনি বাংলাদেশের ২৩ তম টেস্টে বিশ্বের ২৯ তম বোলার হিসাবে ৩২ তম হ্যাট্রিক করেন ।

👉 প্রশ্নঃ টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্বীতিয় হ্যাট্রিক কারী কে?
উত্তরঃ সোহাগ গাজী (১৩ অক্টোবর ২০১৩) তিনি ৩৭ তম বোলার হিসাবে ৪০ তম হ্যাট্রিক করেন ।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে ১০০ উইকেট শিকারী কে?
উত্তরঃ মোহাম্মাদ রফিক ।
👉প্রশ্নঃ টেস্টে বাংলাদেশের সর্ব নিম্ন ইনিংস কত?
উত্তরঃ ৬২ রান বিপক্ষ শ্রীলংকা ।
👉প্রশ্নঃ বিশ্বে একই টেস্টে সেঞ্চুরিয়ান ও হ্যাট্রিক কারী কে?
উত্তরঃ সোহাগ গাজী; বাংলাদেশ ।
👉প্রশ্নঃ বাংলাদেশে প্রথম, টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান কে?
উত্তরঃ মুশফিকুর রহিম ।
👉প্রশ্নঃ প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে টেস্টের আম্পায়ারিংয়ের দায়ীত্ব পান কে?
উত্তরঃ এনামুল হক মনি ।

💎FACT BOOK💎

👉প্রথম জয়-জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানে, ২০০৫ সালে, চট্টগ্রামে।

👉সর্বোচ্চ ইনিংস-৬৩৮ রান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ২০১৩ সালে।

👉সর্বনিন্ম ইনিংস-৬২ রান, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, ২০০৭ সালে।

👉সর্বোচ্চ জয় রানে-২২৬ রানে জয়, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, ২০০৫ সালে।

👉সর্বোচ্চ জয় উইকেটে-৪ উইকেটে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, ২০০৯ সালে।

👉সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান-তামিম ইকবাল, ৪০.৩৪ গড়ে ৩হাজার ৩৪৯ রান।

👉সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস-তামিম ইকবাল, ২০৬ রান, পাকিস্তানের বিপক্ষে।

👉সবচেয়ে বেশি শতক-তামিম ইকবাল, ৮টি।

👉সবচেয়ে বেশি অর্ধশতক-হাবিবুল বাশার, ২৪টি।

👉সবচেয়ে বেশি শূন্য-মোহাম্মদ আশরাফুল, ১৬টি।

👉 এক সিরিজে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান-হাবিবুল বাশার, ৬৩.১৬ গড়ে ৩৭৯ রান।

👉সবচেয়ে বেশি উইকেট-সাকিব আল হাসান, ১৫৯টি।

👉এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি উইকেট-তাইজুল ইসলাম, ৮টি।

👉এক টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট-
যৌথভাবে-মেহেদী হাসান মিরাজ ও এনামুল হক জুনিয়র, ১২ টি।

👉সর্বোচ্চ ৫ উইকেট শিকার-সাকিব আল হাসান, ১৫টি।

👉ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার-একবার করে মিরাজ, এনামুল জুনিয়র ও সাকিব।

👉সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার-মিরাজ, ১৯টি।

👉সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল-মুশফিকুর রহিম, ৯২ টি।

👉ফিল্ডার হিসেবে সর্বোচ্চ ক্যাচ-মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ২৯টি।

👉সর্বোচ্চ জুটি-তামিম-ইমরুল, ৩১২ রান, প্রথম উইকেটে।
👉সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা-মোহাম্মদ আশরাফুল, ৬১ টি।
👉সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অধিনায়ক-মুশফিকুর রহিম, ২৬ ম্যাচ।

Collected

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]