- Tue Jun 05, 2018 5:14 pm#151
"অনার্স করলেই বিসিএস দিতে হবে" এবং "বেকার মানেই ব্যাংক পরীক্ষা দিতেই হবে" এই ধরনের চোখ ধাঁধাঁনো কিছু ক্রেজ বর্তমানে আমাদেরকে পরিচালিত করছে। কেউ কেউ এই ধাঁধাঁয় পরিকল্পনাহীনভাবে গা ভাসিয়ে নষ্ট করছে মূল্যবান সময়। আবার যারা ধাঁধাঁর ফাঁদে পা না দিয়ে সঠিক পরিকল্পনা আর অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে নিজের সামর্থ্যকে দিনদিন শাণিত করতে সক্ষম হচ্ছে তারাই দ্রুত কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে ধাবমান হয়। অর্থ্যাৎ স্বীয় সামর্থ্যের উপর আস্থা রেখে সময়োপযোগী পরিকল্পনার পাশাপাশি পরিশ্রমই হলো লক্ষ্য অর্জনের পূর্বশর্ত।
ব্যাংক, বিসিএস বা অন্যান্য ভালো জব গুলোতে ম্যাথ একটি ভাইটাল রোল কাভার করে। ব্যাংক রিটেন ম্যাথ প্রস্তুতির জন্য আজকাল প্রচুর বই বাজারে খুব বিক্রি হচ্ছে।আমাদের যারা এখনো বেকার তারা হন্যে হয়ে সেই বইগুলো দিয়েই টেবিল সাজিয়ে তুলতেছি। পরিতাপের বিষয় হলো এটাই যে, বইয়ের দোকান গুলোতে আজকাল গনিতের মৌলিক বইয়ের খোঁজে আসা লোকের সংখ্যা অতি নগন্য।বাজারের অলিতে গলিতে দুদিনে গণিত শাস্ত্রে পিএইচডি করা লেখকদের বইয়ের জমজমাট ব্যাবসা চোখে পড়ার মতো। উক্ত লেখকগণ আবার বইয়ের প্রচারনা করতেও যথেষ্ট সজাগ।
আমরা বেশীরভাগ সময়ই মৌলিক বইয়ের কার্যকারিতা বুঝতে চেষ্টাটুকুও করি না। আমরা চাই সবকিছু চটজলদি আর রেডি-মেইড। মনে রাখা জরুরি যে, বৃক্ষের মূল যদি মাটির গভীরে না পৌঁছায় তবে সেটি সাময়িকভাবে যতই হৃষ্ট-পুষ্ট হোক না কেন ঝড়ের যেকোন পর্যায়ে সেটি উপড়ে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী থাকে। গণিতে আপনি ৪ বছর স্নাতক করেছেন সেটা বিবেচ্য নয়,আপনি গণিত কে কতটুকু আত্নস্থ করতে পেরেছেন সেটাই দেখার বিষয়। বিজ্ঞানের ছাত্র না হয়েও আপনি যদি গণিতের প্রত্যেকটা টপিকের জন্য ৫/১০ মিনিট সময় দিয়ে বেসিক উৎপত্তি থেকে বুঝে বুঝে অনুশীলন করেন, তবে নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে আপনিই গণিতে পারদর্শী হবেন।
প্রায়ই আমরা বলি যে, সময় কম তাই বেসিক ম্যাথ করার সময় নাই। সম্প্রতি কয়েকটি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন দেখলে ম্যাথের ডীপ থিংকিং এর গুরুত্বটা বুঝার বাকী থাকার কথা নয়। প্রাসংগিক এই ম্যাথগুলোর টাইপ এমনই, যে অংক নিয়ে গভীর চিন্তা করতে পারবে সে ২/৩ মিনিটেই মূল পয়েন্টে যেতে পারে আর যারা তৈরী করা ম্যাথ গুলো নিয়েই বছরের পর বছর ব্যাস্ত থাকে তারা মূল পয়েন্ট থাক দূরের কথা ম্যাথের কথা বুঝতেই ১০ মিনিট শেষ হয়ে যায়।
পরীক্ষা পদ্ধতি দিনদিন কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে এবং হবে, এটা স্বাভাবিক। এর মূল কারন প্রশ্নকর্তার উদাসীনতা বা ডিপার্টমেন্টের আন্তরিকতাহীনতা নয় বরং প্রতিযোগীর সংখ্যার দিনদিন বৃদ্ধিই হলো প্রধান কারন। আপনি বা আমি উত্তর করতে না পারলেও কেউ না কেউ পারছে। আর ২০ টা রিটেন বা ৩০ টা ভাইবা যা ই দেন, বেঁচে থাকার জন্যেতো একটা জবই দরকার। তাই সব জব এর জন্য জগাখিচুড়ি প্রস্তুতি না নিয়ে ভালো পরিকল্পনা তৈরী করে, ধৈর্য্যধারন করে নিজেকে প্রস্তুত করে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
বেসিক ম্যাথ অ্যাপটিচিয়ুড কে বেশী গুরুত্ব দিন।মৌলিক গনিত বই সংগ্রহে রাখুন আর বাজারের বইগুলো শুধুমাত্র বর্তমান জব কোয়েশ্চেন সম্পর্কে ধারনা নিতে ব্যবহার করুন। ম্যাথের বেসিক কনচ্যাপ্ট ব্যতীত বর্তমান বাজারের সবগুলো বইও সলভ করলে হয়তো ম্যাথের ভাসা ভাসা জ্ঞান লাভ হবে বা হুবহু কমন আসলে দ্রুত করা যাবে, কিন্তু আনকমন ম্যাথে নিজেকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। যা গত কয়েকটি পরীক্ষায় প্রমানিত।
আমার দেখা মতে Dr. R S Agarwal এর ম্যাথ বইটা বেসিক+ প্র্যাকটিসের জন্য বেস্ট একটা বই। অনেকের ধারনা এই বইয়ের ইংলিশ নাকি কঠিন,তাই এটা ধরা ঠিক হবে না। যারা এটা মনে করবে, আমি তাদের জন্য বলব বর্তমান ব্যাংক জব তাদের জন্য না। ইংলিশ আর ম্যাথ ভয়কে জয় করার সামর্থ্য না থাকলে ব্যাংকের প্রস্তুতি নেয়াটা জীবনের কয়েকটা মূল্যবান বছরকে নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বাস্তবতা কখনোই আপনি কী জানেন সেটা জানতে চায় না,বরং বাস্তবতা কী চায় সেটা মেনেই আপনাকে পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে। তাই বৃথা সময় ব্যয় না করে, মৌলিক বই পড়ার মধ্যদিয়েই নিজের ম্যাথ আর ইংলিশের ভীতকে আরো শক্তিশালী করতে পারলেই বেটার আউটপুট নিশ্চিত।
"২০ টা ম্যাথ করলে ৫ টা কমন", "১০ টা essays মুখস্ত করলে ১ টা নিশ্চিত"- এসব বায়োস্কোপ মার্কা সংলাপের দিন শেষ। ম্যাথ-ইংলিশে ভালো করতে প্র্যাকটিসের বিকল্প নেই।
Best wishes for all.....
শংকর দেবনাথ
সিনিয়র অফিসার(সুপারিশপ্রাপ্ত)
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
ব্যাংক, বিসিএস বা অন্যান্য ভালো জব গুলোতে ম্যাথ একটি ভাইটাল রোল কাভার করে। ব্যাংক রিটেন ম্যাথ প্রস্তুতির জন্য আজকাল প্রচুর বই বাজারে খুব বিক্রি হচ্ছে।আমাদের যারা এখনো বেকার তারা হন্যে হয়ে সেই বইগুলো দিয়েই টেবিল সাজিয়ে তুলতেছি। পরিতাপের বিষয় হলো এটাই যে, বইয়ের দোকান গুলোতে আজকাল গনিতের মৌলিক বইয়ের খোঁজে আসা লোকের সংখ্যা অতি নগন্য।বাজারের অলিতে গলিতে দুদিনে গণিত শাস্ত্রে পিএইচডি করা লেখকদের বইয়ের জমজমাট ব্যাবসা চোখে পড়ার মতো। উক্ত লেখকগণ আবার বইয়ের প্রচারনা করতেও যথেষ্ট সজাগ।
আমরা বেশীরভাগ সময়ই মৌলিক বইয়ের কার্যকারিতা বুঝতে চেষ্টাটুকুও করি না। আমরা চাই সবকিছু চটজলদি আর রেডি-মেইড। মনে রাখা জরুরি যে, বৃক্ষের মূল যদি মাটির গভীরে না পৌঁছায় তবে সেটি সাময়িকভাবে যতই হৃষ্ট-পুষ্ট হোক না কেন ঝড়ের যেকোন পর্যায়ে সেটি উপড়ে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী থাকে। গণিতে আপনি ৪ বছর স্নাতক করেছেন সেটা বিবেচ্য নয়,আপনি গণিত কে কতটুকু আত্নস্থ করতে পেরেছেন সেটাই দেখার বিষয়। বিজ্ঞানের ছাত্র না হয়েও আপনি যদি গণিতের প্রত্যেকটা টপিকের জন্য ৫/১০ মিনিট সময় দিয়ে বেসিক উৎপত্তি থেকে বুঝে বুঝে অনুশীলন করেন, তবে নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে আপনিই গণিতে পারদর্শী হবেন।
প্রায়ই আমরা বলি যে, সময় কম তাই বেসিক ম্যাথ করার সময় নাই। সম্প্রতি কয়েকটি ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন দেখলে ম্যাথের ডীপ থিংকিং এর গুরুত্বটা বুঝার বাকী থাকার কথা নয়। প্রাসংগিক এই ম্যাথগুলোর টাইপ এমনই, যে অংক নিয়ে গভীর চিন্তা করতে পারবে সে ২/৩ মিনিটেই মূল পয়েন্টে যেতে পারে আর যারা তৈরী করা ম্যাথ গুলো নিয়েই বছরের পর বছর ব্যাস্ত থাকে তারা মূল পয়েন্ট থাক দূরের কথা ম্যাথের কথা বুঝতেই ১০ মিনিট শেষ হয়ে যায়।
পরীক্ষা পদ্ধতি দিনদিন কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে এবং হবে, এটা স্বাভাবিক। এর মূল কারন প্রশ্নকর্তার উদাসীনতা বা ডিপার্টমেন্টের আন্তরিকতাহীনতা নয় বরং প্রতিযোগীর সংখ্যার দিনদিন বৃদ্ধিই হলো প্রধান কারন। আপনি বা আমি উত্তর করতে না পারলেও কেউ না কেউ পারছে। আর ২০ টা রিটেন বা ৩০ টা ভাইবা যা ই দেন, বেঁচে থাকার জন্যেতো একটা জবই দরকার। তাই সব জব এর জন্য জগাখিচুড়ি প্রস্তুতি না নিয়ে ভালো পরিকল্পনা তৈরী করে, ধৈর্য্যধারন করে নিজেকে প্রস্তুত করে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
বেসিক ম্যাথ অ্যাপটিচিয়ুড কে বেশী গুরুত্ব দিন।মৌলিক গনিত বই সংগ্রহে রাখুন আর বাজারের বইগুলো শুধুমাত্র বর্তমান জব কোয়েশ্চেন সম্পর্কে ধারনা নিতে ব্যবহার করুন। ম্যাথের বেসিক কনচ্যাপ্ট ব্যতীত বর্তমান বাজারের সবগুলো বইও সলভ করলে হয়তো ম্যাথের ভাসা ভাসা জ্ঞান লাভ হবে বা হুবহু কমন আসলে দ্রুত করা যাবে, কিন্তু আনকমন ম্যাথে নিজেকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। যা গত কয়েকটি পরীক্ষায় প্রমানিত।
আমার দেখা মতে Dr. R S Agarwal এর ম্যাথ বইটা বেসিক+ প্র্যাকটিসের জন্য বেস্ট একটা বই। অনেকের ধারনা এই বইয়ের ইংলিশ নাকি কঠিন,তাই এটা ধরা ঠিক হবে না। যারা এটা মনে করবে, আমি তাদের জন্য বলব বর্তমান ব্যাংক জব তাদের জন্য না। ইংলিশ আর ম্যাথ ভয়কে জয় করার সামর্থ্য না থাকলে ব্যাংকের প্রস্তুতি নেয়াটা জীবনের কয়েকটা মূল্যবান বছরকে নষ্ট করা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বাস্তবতা কখনোই আপনি কী জানেন সেটা জানতে চায় না,বরং বাস্তবতা কী চায় সেটা মেনেই আপনাকে পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে। তাই বৃথা সময় ব্যয় না করে, মৌলিক বই পড়ার মধ্যদিয়েই নিজের ম্যাথ আর ইংলিশের ভীতকে আরো শক্তিশালী করতে পারলেই বেটার আউটপুট নিশ্চিত।
"২০ টা ম্যাথ করলে ৫ টা কমন", "১০ টা essays মুখস্ত করলে ১ টা নিশ্চিত"- এসব বায়োস্কোপ মার্কা সংলাপের দিন শেষ। ম্যাথ-ইংলিশে ভালো করতে প্র্যাকটিসের বিকল্প নেই।
Best wishes for all.....
শংকর দেবনাথ
সিনিয়র অফিসার(সুপারিশপ্রাপ্ত)
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।