- Fri Nov 30, 2018 11:29 pm#1215
অধ্যয়নের টেকনিক নয় বরং যে সকল পূর্ব প্রস্তুতির মাধ্যমে আমরা নিজেদের প্রতিভাকে আরো শাণিত করতে পারবো সে বিষয়গুলি এখানে আলোচনা করা হয়েছেঃ
১. খাবার : খাবারের পরিমাণের ওপর মস্তিস্ক চালনা নির্ভর করে। ভালভাবে মস্তিস্ক কাজে লাগাতে চাইলে পেটে একটু ক্ষুধা রেখে খেতে হয়। রাসূল (সা) যে নিজে অল্পাহার করেছেন ও আমাদের করার জন্যে বলেছেন তা অত্যন্ত বিজ্ঞান ভিত্তিক। অতিভোজনের ফলে রক্ত মাথা থেকে পাকস্থলীতে হজম ক্রিয়ার জন্যে নেমে আসে। তার ফলে মস্তিস্কের ক্রিয়ার ব্যাঘাত হয়। তদ্রুপ অনাহারও মস্তিস্কের ক্রিয়ার সমস্যা করে।ভি .এইচ .মর্টাম তার ‘‘হিউম্যান নিউট্রিশান “ গ্রন্থে ছাত্রদের মোট পাঁচবার খেতে বলেছেন। এর অর্থ হচ্ছে ছাত্রদের বারে বেশি খেতে হবে কিন্তু পরিমাণে কম।
২. কোষ্ঠশুদ্ধি : নিয়মিত কোষ্ঠশুদ্ধি না হলে পেটে জমা খাদ্যের অংশগুলি পচে যে গ্যাস হয় তা মস্তিস্কের উপর সরাসরি বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। এজন্যে যাদের বদহজম আছে তারা মাথার কাজ বেশি করতে পারে না।
৩. চাই প্রচুর অক্সিজেন : মস্তিস্ক চালনাকালে কর্টেক্সের বিশেষ বিশেষ কেন্দ্রের নিউরন পুঞ্জের মধ্যে অত্যন্ত প্রবলবেগে বৈদ্যুতিক প্রবাহের ন্যায় এক প্রকার তীব্র প্রবাহ চলতে থাকে। বৈজ্ঞানিকগণ এই প্রবাহের গতি মেপে দেখেছেন। নিউরন-সৃষ্ট তরঙ্গ প্রবাহের আঁকাবাঁকা রেখাগুলি সেকেন্ডে দশ থেকে পনের বার পর্যন্ত স্পন্দিত হয়। এতে যে কি পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয় তা সহজেই অনুমেয়। তাই যখনই মস্তিস্কের বিশেষ কেন্দ্র সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন রক্ত সেখানে এসে সর্বপ্রকার শক্তি যুগিয়ে দেয়। রক্ত যে শক্তি দেয় তার প্রধান দুটি অংশের একটা হলো শর্করা এবং অন্যটা হলো অক্সিজেন। মস্তিষ্কেও কঠোর স্নায়বিক কাজের জন্য যে পরিমাণ বাড়তি অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় তার পরিমাণ স্বাভাবিক দেহ ধারণের জন্যে যেটুকু অক্সিজেন প্রয়োজন হয় তার চাইতে দশ থেকে বিশগুণ বেশি। সুতরাং এই অতিরিক্ত অক্সিজেন যাতে রক্ত সংগ্রহ করতে পারে তার জন্যে প্রত্যেক মস্তিষ্কজীবীকে প্রত্যহ অন্তত দুঘন্টা মুক্তবাতাসে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র একাজটি না করায় পরিণত বয়সে খুবই অসুস্থ হয়ে যান। আর আমরা দেখি রাসূল (সা ) সহ আরো যে সকল মণীষী ধ্যান করেছেন তারা প্রত্যেকেই বেছে নিয়েছেন বিশুদ্ধ বায়ুময় নিরিবিলি জায়গা। অর্থাৎ বিশুদ্ধ অক্সিজেন মগজের ক্ষমতাকে শাণিত করে।
৪. শরীরের জন্য ঘুম : ঘুম মস্তিষ্কজীবীদের এক অমূল্য ঔষধ। অনেকেই মনে করেন যারা বেশি পড়ালেখা করে তাদের কম ঘুমালেই চলে। কিন্তু ধারনাটি ভুল। বরং তাদেরই ঘুমের দরকার হয় বেশি। দু’টি কারণে তাদের ঘুমের দরকার হয় বেশি। প্রথমতঃ এতে কর্টেক্সের নিউরনগুলির পরিপূর্ণ বিশ্রাম ঘটে, দ্বিতীয়তঃ নিদ্রাকালে রক্ত নিজে বিশোধিত হয় এবং বাতাস থেকে প্রচুর পরিমাণে বাড়তি অক্সিজেন সংগ্রহ করে নেয়। আর তাই চার্চিল নব্বই বৎসর বয়সেও বার থেকে পনের ঘন্টা করে মানসিক পরিশ্রম করতে পারতেন। কেননা তিনি সেই বয়সেই নয় ঘন্টা করে নিদ্রা যেতেন।
৫. সময় ও পরিবেশ : পড়ালেখার জন্য সময় ও পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মহাগ্রন্থ আল কুরআন অধ্যয়নের জন্যে শেষরাতের সময়টিকে বেশি উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা সে সময়ে সারা পৃথিবী থাকে নিস্তব্ধ আর পরিবেশটা থাকে অনেকটা ঠান্ডা। সুতরাং কোলাহলমুক্ত পরিবেশ আর অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়া মগজকে কার্যকরী করার জন্যে বেশি উপযোগী। আর তাই গরম দেশের চাইতে শীতপ্রধান দেশের মানুষ তুলনামূলকভাবে বেশি মেধাবী হয়।
একজন কিশোরের গল্প বলবো, সে মাইলের পর মাইল হেঁটে গিয়ে বই ধার করে এনে পড়তো। তার পড়ার সময় ছিল দিনের কাজের শেষে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়তো, কামরার মধ্যে চুল্লিতে একটা নতুন কাঠ জ্বালিয়ে সেই আলোয় সে পড়তো, ঘুমে ঢুলে না পড়া পর্যন্ত। কালক্রমে সেই হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের মহান প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন।
পরিশেষে বই পড়া নিয়ে কিছু বিখ্যাত উক্তি শেয়ার করছি ...
স্পিনোজা বলেছেন,
” ভালো খাদ্যবস্তুতে পেট ভরে, কিন্তু ভালো বই মানুষের আত্মাকে পরিতৃপ্ত করে।” দেকার্তে বলেছেন,” ভালো বই পড়াটা যেন গত শতকগুলির সেরা মানুষদের সাথে কথা বলা।”
ইউরোপ কাঁপানো নেপোলিয়ান কি বলেছেন জান?তিনি বলেছেন,
” অন্তত ষাট হাজার বই সঙ্গে না থাকলে জীবন অচল।”
ভারতে বৃটিশ শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তক জন মেকলে বলেছেন আরও মজার কথা, বরং প্রচুর বই নিয়ে গরীব হয়ে চিলোকোঠায় থাকবো,তবু এমন রাজা হতে চাইনা যে বই পড়তে ভালোবাসে না।”
আর সবচাইতে চরম কথাটি বলেছেন নর্মান মেলর,
“ আমি চাই বই পাঠরত অবস্থায় যেন আমার মৃত্যু হয়।”
আর রাসূল (সা) বলেছেন সবচাইতে মূল্যবান কথাটি,
” জ্ঞান হচ্ছে তোমাদের হারানো সম্পদ, সুতরাং যেখানে তা পাও কুড়িয়ে নাও।’’
সংগৃহিতঃ- Raisul Islam Hridoy
১. খাবার : খাবারের পরিমাণের ওপর মস্তিস্ক চালনা নির্ভর করে। ভালভাবে মস্তিস্ক কাজে লাগাতে চাইলে পেটে একটু ক্ষুধা রেখে খেতে হয়। রাসূল (সা) যে নিজে অল্পাহার করেছেন ও আমাদের করার জন্যে বলেছেন তা অত্যন্ত বিজ্ঞান ভিত্তিক। অতিভোজনের ফলে রক্ত মাথা থেকে পাকস্থলীতে হজম ক্রিয়ার জন্যে নেমে আসে। তার ফলে মস্তিস্কের ক্রিয়ার ব্যাঘাত হয়। তদ্রুপ অনাহারও মস্তিস্কের ক্রিয়ার সমস্যা করে।ভি .এইচ .মর্টাম তার ‘‘হিউম্যান নিউট্রিশান “ গ্রন্থে ছাত্রদের মোট পাঁচবার খেতে বলেছেন। এর অর্থ হচ্ছে ছাত্রদের বারে বেশি খেতে হবে কিন্তু পরিমাণে কম।
২. কোষ্ঠশুদ্ধি : নিয়মিত কোষ্ঠশুদ্ধি না হলে পেটে জমা খাদ্যের অংশগুলি পচে যে গ্যাস হয় তা মস্তিস্কের উপর সরাসরি বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। এজন্যে যাদের বদহজম আছে তারা মাথার কাজ বেশি করতে পারে না।
৩. চাই প্রচুর অক্সিজেন : মস্তিস্ক চালনাকালে কর্টেক্সের বিশেষ বিশেষ কেন্দ্রের নিউরন পুঞ্জের মধ্যে অত্যন্ত প্রবলবেগে বৈদ্যুতিক প্রবাহের ন্যায় এক প্রকার তীব্র প্রবাহ চলতে থাকে। বৈজ্ঞানিকগণ এই প্রবাহের গতি মেপে দেখেছেন। নিউরন-সৃষ্ট তরঙ্গ প্রবাহের আঁকাবাঁকা রেখাগুলি সেকেন্ডে দশ থেকে পনের বার পর্যন্ত স্পন্দিত হয়। এতে যে কি পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন হয় তা সহজেই অনুমেয়। তাই যখনই মস্তিস্কের বিশেষ কেন্দ্র সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন রক্ত সেখানে এসে সর্বপ্রকার শক্তি যুগিয়ে দেয়। রক্ত যে শক্তি দেয় তার প্রধান দুটি অংশের একটা হলো শর্করা এবং অন্যটা হলো অক্সিজেন। মস্তিষ্কেও কঠোর স্নায়বিক কাজের জন্য যে পরিমাণ বাড়তি অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় তার পরিমাণ স্বাভাবিক দেহ ধারণের জন্যে যেটুকু অক্সিজেন প্রয়োজন হয় তার চাইতে দশ থেকে বিশগুণ বেশি। সুতরাং এই অতিরিক্ত অক্সিজেন যাতে রক্ত সংগ্রহ করতে পারে তার জন্যে প্রত্যেক মস্তিষ্কজীবীকে প্রত্যহ অন্তত দুঘন্টা মুক্তবাতাসে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র একাজটি না করায় পরিণত বয়সে খুবই অসুস্থ হয়ে যান। আর আমরা দেখি রাসূল (সা ) সহ আরো যে সকল মণীষী ধ্যান করেছেন তারা প্রত্যেকেই বেছে নিয়েছেন বিশুদ্ধ বায়ুময় নিরিবিলি জায়গা। অর্থাৎ বিশুদ্ধ অক্সিজেন মগজের ক্ষমতাকে শাণিত করে।
৪. শরীরের জন্য ঘুম : ঘুম মস্তিষ্কজীবীদের এক অমূল্য ঔষধ। অনেকেই মনে করেন যারা বেশি পড়ালেখা করে তাদের কম ঘুমালেই চলে। কিন্তু ধারনাটি ভুল। বরং তাদেরই ঘুমের দরকার হয় বেশি। দু’টি কারণে তাদের ঘুমের দরকার হয় বেশি। প্রথমতঃ এতে কর্টেক্সের নিউরনগুলির পরিপূর্ণ বিশ্রাম ঘটে, দ্বিতীয়তঃ নিদ্রাকালে রক্ত নিজে বিশোধিত হয় এবং বাতাস থেকে প্রচুর পরিমাণে বাড়তি অক্সিজেন সংগ্রহ করে নেয়। আর তাই চার্চিল নব্বই বৎসর বয়সেও বার থেকে পনের ঘন্টা করে মানসিক পরিশ্রম করতে পারতেন। কেননা তিনি সেই বয়সেই নয় ঘন্টা করে নিদ্রা যেতেন।
৫. সময় ও পরিবেশ : পড়ালেখার জন্য সময় ও পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মহাগ্রন্থ আল কুরআন অধ্যয়নের জন্যে শেষরাতের সময়টিকে বেশি উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা সে সময়ে সারা পৃথিবী থাকে নিস্তব্ধ আর পরিবেশটা থাকে অনেকটা ঠান্ডা। সুতরাং কোলাহলমুক্ত পরিবেশ আর অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়া মগজকে কার্যকরী করার জন্যে বেশি উপযোগী। আর তাই গরম দেশের চাইতে শীতপ্রধান দেশের মানুষ তুলনামূলকভাবে বেশি মেধাবী হয়।
একজন কিশোরের গল্প বলবো, সে মাইলের পর মাইল হেঁটে গিয়ে বই ধার করে এনে পড়তো। তার পড়ার সময় ছিল দিনের কাজের শেষে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়তো, কামরার মধ্যে চুল্লিতে একটা নতুন কাঠ জ্বালিয়ে সেই আলোয় সে পড়তো, ঘুমে ঢুলে না পড়া পর্যন্ত। কালক্রমে সেই হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের মহান প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন।
পরিশেষে বই পড়া নিয়ে কিছু বিখ্যাত উক্তি শেয়ার করছি ...
স্পিনোজা বলেছেন,
” ভালো খাদ্যবস্তুতে পেট ভরে, কিন্তু ভালো বই মানুষের আত্মাকে পরিতৃপ্ত করে।” দেকার্তে বলেছেন,” ভালো বই পড়াটা যেন গত শতকগুলির সেরা মানুষদের সাথে কথা বলা।”
ইউরোপ কাঁপানো নেপোলিয়ান কি বলেছেন জান?তিনি বলেছেন,
” অন্তত ষাট হাজার বই সঙ্গে না থাকলে জীবন অচল।”
ভারতে বৃটিশ শিক্ষাব্যবস্থার প্রবর্তক জন মেকলে বলেছেন আরও মজার কথা, বরং প্রচুর বই নিয়ে গরীব হয়ে চিলোকোঠায় থাকবো,তবু এমন রাজা হতে চাইনা যে বই পড়তে ভালোবাসে না।”
আর সবচাইতে চরম কথাটি বলেছেন নর্মান মেলর,
“ আমি চাই বই পাঠরত অবস্থায় যেন আমার মৃত্যু হয়।”
আর রাসূল (সা) বলেছেন সবচাইতে মূল্যবান কথাটি,
” জ্ঞান হচ্ছে তোমাদের হারানো সম্পদ, সুতরাং যেখানে তা পাও কুড়িয়ে নাও।’’
সংগৃহিতঃ- Raisul Islam Hridoy