- Wed Feb 09, 2022 11:32 pm#7403
আরিফুর রহমান
সাবেক উপ-পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক
সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রশাসন ক্যাডার, ৩৪ তম বিসিএস
বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে পায়ই নিয়োগ দেওয়া হয়। এ চাকরি বিসিএস এর চেয়ে কম লোভনীয় নয়। অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে পড়াশোনার শেসের দিকে ক্যারিয়ার নিয়ে যখন ভাবছিলাম, তখন বিসিএস, ব্যাংক ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি-এই তিনটি সেক্টর নিয়েই ভেবেছি। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম ব্যাংকারই হব। আমার পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনার্সের পাঠ চুকিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে আবেদন শুরু করি। জীবনের দ্বিতীয় ভাইয়ই একটা কমার্শিয়াল ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে চাকরি পেয়ে যাই। নিয়মিত অফিস করি, পুরোদস্তুর ব্যাংকার। তার পরও বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। একদিন আমার এক বন্ধু জানাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পদে সার্কুলার হয়েছে। ওয়েবসাইটে ঢুকে সার্কুলারটি দেখি। সেদিন রাতেই অনলাইনে আবেদন করি। বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন অনেক সহজ, কোন ফিও গুনতে হয়নি। মাস দুয়েক পর পরীক্ষার তারিখ ঠিক হলো। প্রবেশপত্র সংগ্রহ করলাম ওয়েবসাইট থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নের ধরন, মান বন্টন, কী কী বিষয়ে প্রশ্ন হয় সে বিষয়ে আগে থেকেই ধারণ ছিল। প্রিলিমিনারি অংশে ভালো করার জন্য গণিত ও অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটির ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। জোর অনুশীলন করেছিলাম ‘জিআরই’র ব্যারনস সিরিজের বই। এ ছাড়া বাংলা, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তির জন্য বিগত বছরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন দেখে প্রস্তুত করেছিলাম নিজেকে। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও ইতিহাসের বই নিয়মিত পড়তাম, তাই সাধারণ জ্ঞান নিয়ে তেমন চিন্তাই করতে হয়নি। বাংলা ব্যাকরণ অংশের জন্য পড়েছিলাম নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ।
লিখিত অংশের গণিত, ইংরেজী, বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম ব্যাংক নিয়োগ গাইড ও অন্যান্য সহায়ক বই থেকে। লিখিত অংশে ভাল করার জন্য বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম গণিত চর্চা, অনুবাদ, শব্দ ভান্ডার বাড়ানো ও ফ্রি হ্যান্ড রাইটিংয়ের উপর। বিভিন্ন ইংরেজী দৈনিক পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয় নিয়মিত পড়তাম, এটা কাজে দিয়েছিল।
যে বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে ১০০টির বিপরীতে আবেদন পড়েছিল ৭০ হাজার। অর্থাৎ এ চাকরি পাওয়া ছিল খুই চ্যালেঞ্জিং। মাথা ঠান্ডা রেখে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলাম বলে পরীক্ষা ভালো হয়েছিল। লিখিত পরীক্ষার পর আমার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। ভাইভায়ও ভালো করলাম। ভাইভা বোর্ডে অর্থনীতি থেকেই অধিকাংশ প্রশ্ন করা হয়েছিল। প্রশ্ন করা হয়েছিল ক্যাপিটাল মার্কেট এবং মানি মার্কেট কি? গুলিস্থানে যে নতুন টাকা বিক্রি হয় সেটা কী ক্যাপিটাল মার্কেট, না মানি মার্কেট? সেন্ট্রাল ব্যাংকের কয়েকটি কাজের কথা বলুন। কেন কমার্শিয়াল ব্যাংকের বেশি বেতন ছেড়ে কম বেতনে এখানে চারি করতে চান? গুছিয়ে বিচক্ষণতার সাথে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম।
লিখিত ও ভাইভা দেওয়ার পর ধরেই নিয়েছিলাম চাকরিটা আমার হবে। হয়েছিলও তাই। চূড়ান্ত ফলাফলে আমি নির্বাচিত হই। ছয় মাসের ট্রেনিং হয়েছিল মিরুপরের বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে। কর্মক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক অসাধারণ। চাকরির প্রথম দিনের কথা এখনও মনে আছে। নতুন যোগ দিয়ে সহজেই মানিয়ে নিতে পেরেছিলাম কর্মপরিবেশের সাথ। পরে অবশ্য ৩৪ তম বিসিএস এর মাধ্যমে যো দিই প্রশাসন ক্যাডারে।
Collected
সাবেক উপ-পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক
সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রশাসন ক্যাডার, ৩৪ তম বিসিএস
বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে পায়ই নিয়োগ দেওয়া হয়। এ চাকরি বিসিএস এর চেয়ে কম লোভনীয় নয়। অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে পড়াশোনার শেসের দিকে ক্যারিয়ার নিয়ে যখন ভাবছিলাম, তখন বিসিএস, ব্যাংক ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি-এই তিনটি সেক্টর নিয়েই ভেবেছি। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম ব্যাংকারই হব। আমার পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনার্সের পাঠ চুকিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে আবেদন শুরু করি। জীবনের দ্বিতীয় ভাইয়ই একটা কমার্শিয়াল ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার পদে চাকরি পেয়ে যাই। নিয়মিত অফিস করি, পুরোদস্তুর ব্যাংকার। তার পরও বাংলাদেশ ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। একদিন আমার এক বন্ধু জানাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পদে সার্কুলার হয়েছে। ওয়েবসাইটে ঢুকে সার্কুলারটি দেখি। সেদিন রাতেই অনলাইনে আবেদন করি। বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন অনেক সহজ, কোন ফিও গুনতে হয়নি। মাস দুয়েক পর পরীক্ষার তারিখ ঠিক হলো। প্রবেশপত্র সংগ্রহ করলাম ওয়েবসাইট থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশ্নের ধরন, মান বন্টন, কী কী বিষয়ে প্রশ্ন হয় সে বিষয়ে আগে থেকেই ধারণ ছিল। প্রিলিমিনারি অংশে ভালো করার জন্য গণিত ও অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটির ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। জোর অনুশীলন করেছিলাম ‘জিআরই’র ব্যারনস সিরিজের বই। এ ছাড়া বাংলা, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তির জন্য বিগত বছরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন দেখে প্রস্তুত করেছিলাম নিজেকে। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও ইতিহাসের বই নিয়মিত পড়তাম, তাই সাধারণ জ্ঞান নিয়ে তেমন চিন্তাই করতে হয়নি। বাংলা ব্যাকরণ অংশের জন্য পড়েছিলাম নবম-দশম শ্রেণির ব্যাকরণ।
লিখিত অংশের গণিত, ইংরেজী, বাংলা বিষয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম ব্যাংক নিয়োগ গাইড ও অন্যান্য সহায়ক বই থেকে। লিখিত অংশে ভাল করার জন্য বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম গণিত চর্চা, অনুবাদ, শব্দ ভান্ডার বাড়ানো ও ফ্রি হ্যান্ড রাইটিংয়ের উপর। বিভিন্ন ইংরেজী দৈনিক পত্রিকার কলাম ও সম্পাদকীয় নিয়মিত পড়তাম, এটা কাজে দিয়েছিল।
যে বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে ১০০টির বিপরীতে আবেদন পড়েছিল ৭০ হাজার। অর্থাৎ এ চাকরি পাওয়া ছিল খুই চ্যালেঞ্জিং। মাথা ঠান্ডা রেখে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে উত্তর দিয়েছিলাম বলে পরীক্ষা ভালো হয়েছিল। লিখিত পরীক্ষার পর আমার আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। ভাইভায়ও ভালো করলাম। ভাইভা বোর্ডে অর্থনীতি থেকেই অধিকাংশ প্রশ্ন করা হয়েছিল। প্রশ্ন করা হয়েছিল ক্যাপিটাল মার্কেট এবং মানি মার্কেট কি? গুলিস্থানে যে নতুন টাকা বিক্রি হয় সেটা কী ক্যাপিটাল মার্কেট, না মানি মার্কেট? সেন্ট্রাল ব্যাংকের কয়েকটি কাজের কথা বলুন। কেন কমার্শিয়াল ব্যাংকের বেশি বেতন ছেড়ে কম বেতনে এখানে চারি করতে চান? গুছিয়ে বিচক্ষণতার সাথে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম।
লিখিত ও ভাইভা দেওয়ার পর ধরেই নিয়েছিলাম চাকরিটা আমার হবে। হয়েছিলও তাই। চূড়ান্ত ফলাফলে আমি নির্বাচিত হই। ছয় মাসের ট্রেনিং হয়েছিল মিরুপরের বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে। কর্মক্ষেত্র হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক অসাধারণ। চাকরির প্রথম দিনের কথা এখনও মনে আছে। নতুন যোগ দিয়ে সহজেই মানিয়ে নিতে পেরেছিলাম কর্মপরিবেশের সাথ। পরে অবশ্য ৩৪ তম বিসিএস এর মাধ্যমে যো দিই প্রশাসন ক্যাডারে।
Collected