- Sat Sep 01, 2018 2:36 pm#683
লেখাটি অবশ্যই পড়বেন, লিখেছেন "ইসরাফিল মোহাম্মদ"
এত লেখাপড়া করে শেষ পর্যন্ত প্রাইমারিতে ঢুকলা!
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকের পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হবার পর মনটা খুশিতে ভরে উঠল। যাহোক জীবনের একটা গতি হলো। কিন্তু ঘরের বাইরের মানুষের অদ্ভুত সহানুভূতি অার অাফসোস দেখে কয়েকদিনের মধ্যেই সেই খুশিটা ফিকে হয়ে গেল। এত লেখাপড়া করে শেষ পর্যন্ত প্রাইমারিতে ঢুকলা! তো এত লেখাপড়ার কী দরকার ছিল। টি এন ও, ম্যাজিস্ট্রেট হইতে পারলাম না। সবারই অাফসোস।
টি এন ও, ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারার তেমন অাক্ষেপ অামার নেই। কিন্তু মানুষের লোক দেখানো অাক্ষেপ অামাকে ভাবিয়ে তুললো। অামি যদি কোন চাকুরি না পেয়ে বেকার থাকতাম এ লোকগুলো তখনও সহানুভূতিই দেখাতো। "এত লেখাপড়া করে একটা চাকুরি পাইলানা! অামাদের পোলাগুলাই ঠিক কাম করসে। বিদেশ চলে গেছে।" এ লোকগুলোই পশ্চাতে হাসাহাসি করতো চাকুরি না পাবার কারণে।
অামি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সংগ্রাম করছিলাম(অনেক শিক্ষার্থী করে) তখন তারা কোনদিন খোঁজ নেয় নি। খেয়েছি, না খাই নি তার খোঁজ কখনো নেয় নি।
কিন্তু এই অামি প্রাইমারি শিক্ষক হিসেবে কাজ করে চারটা ডাল ভাত খেয়ে ভালো থাকবো; সেটাও হতে দিচ্ছিলো না সমাজের তথাকথিত সহানুভূতি দেখানো লোকগুলোই। এ লোকগুলোই যখন একটা লোক প্রাইমারী চাকুরি থেকে অথবা তৃতীয় শ্রেণির চাকুরি থেকে যখন প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণির চাকুরি পায় তখন অাবার চাপা ঈর্ষায় পুড়তে থাকে।
অর্থাৎ অাপনি যে অবস্থানেই পৌঁছুন না কেন, অাপনাকে ভালো থাকতে দিবে না সমাজের কিছু মানুষ। অাপনার মনে কোন লোভ নেই! উঁহু এটা হতে দিবে না ঐ লোক গুলো। যে ভাবেই হোক অাপনার মনে লোভ, হতাশা ঢুকিয়ে দিয়েই ছাড়বে এ লোকগুলো। অাপনি ভালো থাকলেও ঐ লোকগুলো অাপনাকে চোখে অাঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার প্রাণপণ প্রচেষ্টা করবে যে, অাপনি ভালো নেই।
অামাকে প্রায়ই অনেকে জিজ্ঞেস করেন কত বেতন পাই। বেতনটা বলি। অার কিছু অাছে কিনা জানতে চান। ভাতার কথাও বলি। তারপরও তিনি সন্তুষ্ট নন। উপরি কোন অায় অাছে কিনা জানতে চান। উপরি অায় বলতে বাম হাতের ব্যপারটাকে ইঙ্গিত করেন এবং এটাতেই তাঁদের অাগ্রহ বেশি। যখন সম্মানীয় বয়সের কোন ব্যক্তি বাম হাতের ব্যপার জানতে চান তখন অাত্ন জিজ্ঞাসা জাগে, এরাই সেই লোক, যাদেরকে সবাই সম্মান করতে বলে! এরাই তাহলে সমাজের সাদা অপরাধগুলো লালন করছে!
বাংলাদেশে অনেক প্রাইমারি শিক্ষক তাঁর চাকুরি দিয়ে সংসার চালান। অনেক লোকের অন্ন জুটে এ চাকুরি দিয়ে। অথচ এ চাকুরিটাকেই উপহাস করে সমাজের লোক ঐ অন্নদাতার জীবন মন বিষিয়ে তোলেন। তার জীবন বৃথা এটা প্রমাণ করা পর্যন্ত ছাড়বেন না।
অাপনার চাকুরি নেই। এখন অাপনি দুচারটা গরু ছাগল পালন করবেন? অথবা কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষ করবেন! অথবা বাড়ির উঠানে কিছু হাঁস মুরগী পালন করবেন! না, সেটা কখনো হতে দিবেন না চায়ের দোকানে, মোড়ে বা পবিত্র কোন স্থানে অাড্ডা মারা এসব তথাকথিত সম্মানীয় লোকগুলো। " এত লেখাপড়া কইরা, চাষা হইছে! তো কী লাভ এত পইড়া।" এজন্যই জাপানি পর্যটক ঢাকার ড্রেন পরিষ্কার করেন অার ঢাকার লোকজন তামাশা দেখেন।
যারা মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বা বিত্তবান পরিবারের তাঁরা হয়তো বুঝতে পারেন না। কিন্তু নিম্নবিত্তগণ বুঝেন নিজের পায়ে দাঁড়ানো কঠিন। অামরা প্রায়ই দেখি রিক্সাওয়ালার ছেলে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। কিন্তু তিনি জানেন কী ভয়ানক সংগ্রাম তিনি করেছেন। এজন্য তাঁর জীবনের অর্ধেকে থাকে ক্যাডার হওয়ার ঔজ্বল্য, অন্যপাশে থাকে সংগ্রামের কালো অধ্যায়।
অাপনি কি মনে করেন, অামাদের দেশের যুবক, যুবতীরা কাজ করতে চায় না? সবাই চায়। কিন্তু কাজ করতে দেয় না সমাজের ঐ মানুষগুলো। এজন্যই জনসংখ্যার লভ্যাংশকাল চললেও অামাদের যুবক যুবতীরা কিছুই করতে পারছে না। অার এজন্য অামাদের চারপাশে, প্রমিজিং কিন্তু কর্মহীন এক যুবসম্প্রদায়।
তাই যারা প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় অাবেদন করেছেন, চেষ্টা করুন চাকুরিটা পেতে। সুযোগ পেলে উপরে উঠবেন। না উঠতে পারলেও হতাশ হবার কিছু নেই।
নিজের অায়ে ডাল ভাত খাওয়ার চেয়ে শান্তি অার কিছুতে নেই।
এত লেখাপড়া করে শেষ পর্যন্ত প্রাইমারিতে ঢুকলা!
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকের পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হবার পর মনটা খুশিতে ভরে উঠল। যাহোক জীবনের একটা গতি হলো। কিন্তু ঘরের বাইরের মানুষের অদ্ভুত সহানুভূতি অার অাফসোস দেখে কয়েকদিনের মধ্যেই সেই খুশিটা ফিকে হয়ে গেল। এত লেখাপড়া করে শেষ পর্যন্ত প্রাইমারিতে ঢুকলা! তো এত লেখাপড়ার কী দরকার ছিল। টি এন ও, ম্যাজিস্ট্রেট হইতে পারলাম না। সবারই অাফসোস।
টি এন ও, ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারার তেমন অাক্ষেপ অামার নেই। কিন্তু মানুষের লোক দেখানো অাক্ষেপ অামাকে ভাবিয়ে তুললো। অামি যদি কোন চাকুরি না পেয়ে বেকার থাকতাম এ লোকগুলো তখনও সহানুভূতিই দেখাতো। "এত লেখাপড়া করে একটা চাকুরি পাইলানা! অামাদের পোলাগুলাই ঠিক কাম করসে। বিদেশ চলে গেছে।" এ লোকগুলোই পশ্চাতে হাসাহাসি করতো চাকুরি না পাবার কারণে।
অামি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সংগ্রাম করছিলাম(অনেক শিক্ষার্থী করে) তখন তারা কোনদিন খোঁজ নেয় নি। খেয়েছি, না খাই নি তার খোঁজ কখনো নেয় নি।
কিন্তু এই অামি প্রাইমারি শিক্ষক হিসেবে কাজ করে চারটা ডাল ভাত খেয়ে ভালো থাকবো; সেটাও হতে দিচ্ছিলো না সমাজের তথাকথিত সহানুভূতি দেখানো লোকগুলোই। এ লোকগুলোই যখন একটা লোক প্রাইমারী চাকুরি থেকে অথবা তৃতীয় শ্রেণির চাকুরি থেকে যখন প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণির চাকুরি পায় তখন অাবার চাপা ঈর্ষায় পুড়তে থাকে।
অর্থাৎ অাপনি যে অবস্থানেই পৌঁছুন না কেন, অাপনাকে ভালো থাকতে দিবে না সমাজের কিছু মানুষ। অাপনার মনে কোন লোভ নেই! উঁহু এটা হতে দিবে না ঐ লোক গুলো। যে ভাবেই হোক অাপনার মনে লোভ, হতাশা ঢুকিয়ে দিয়েই ছাড়বে এ লোকগুলো। অাপনি ভালো থাকলেও ঐ লোকগুলো অাপনাকে চোখে অাঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার প্রাণপণ প্রচেষ্টা করবে যে, অাপনি ভালো নেই।
অামাকে প্রায়ই অনেকে জিজ্ঞেস করেন কত বেতন পাই। বেতনটা বলি। অার কিছু অাছে কিনা জানতে চান। ভাতার কথাও বলি। তারপরও তিনি সন্তুষ্ট নন। উপরি কোন অায় অাছে কিনা জানতে চান। উপরি অায় বলতে বাম হাতের ব্যপারটাকে ইঙ্গিত করেন এবং এটাতেই তাঁদের অাগ্রহ বেশি। যখন সম্মানীয় বয়সের কোন ব্যক্তি বাম হাতের ব্যপার জানতে চান তখন অাত্ন জিজ্ঞাসা জাগে, এরাই সেই লোক, যাদেরকে সবাই সম্মান করতে বলে! এরাই তাহলে সমাজের সাদা অপরাধগুলো লালন করছে!
বাংলাদেশে অনেক প্রাইমারি শিক্ষক তাঁর চাকুরি দিয়ে সংসার চালান। অনেক লোকের অন্ন জুটে এ চাকুরি দিয়ে। অথচ এ চাকুরিটাকেই উপহাস করে সমাজের লোক ঐ অন্নদাতার জীবন মন বিষিয়ে তোলেন। তার জীবন বৃথা এটা প্রমাণ করা পর্যন্ত ছাড়বেন না।
অাপনার চাকুরি নেই। এখন অাপনি দুচারটা গরু ছাগল পালন করবেন? অথবা কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষ করবেন! অথবা বাড়ির উঠানে কিছু হাঁস মুরগী পালন করবেন! না, সেটা কখনো হতে দিবেন না চায়ের দোকানে, মোড়ে বা পবিত্র কোন স্থানে অাড্ডা মারা এসব তথাকথিত সম্মানীয় লোকগুলো। " এত লেখাপড়া কইরা, চাষা হইছে! তো কী লাভ এত পইড়া।" এজন্যই জাপানি পর্যটক ঢাকার ড্রেন পরিষ্কার করেন অার ঢাকার লোকজন তামাশা দেখেন।
যারা মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বা বিত্তবান পরিবারের তাঁরা হয়তো বুঝতে পারেন না। কিন্তু নিম্নবিত্তগণ বুঝেন নিজের পায়ে দাঁড়ানো কঠিন। অামরা প্রায়ই দেখি রিক্সাওয়ালার ছেলে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। কিন্তু তিনি জানেন কী ভয়ানক সংগ্রাম তিনি করেছেন। এজন্য তাঁর জীবনের অর্ধেকে থাকে ক্যাডার হওয়ার ঔজ্বল্য, অন্যপাশে থাকে সংগ্রামের কালো অধ্যায়।
অাপনি কি মনে করেন, অামাদের দেশের যুবক, যুবতীরা কাজ করতে চায় না? সবাই চায়। কিন্তু কাজ করতে দেয় না সমাজের ঐ মানুষগুলো। এজন্যই জনসংখ্যার লভ্যাংশকাল চললেও অামাদের যুবক যুবতীরা কিছুই করতে পারছে না। অার এজন্য অামাদের চারপাশে, প্রমিজিং কিন্তু কর্মহীন এক যুবসম্প্রদায়।
তাই যারা প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় অাবেদন করেছেন, চেষ্টা করুন চাকুরিটা পেতে। সুযোগ পেলে উপরে উঠবেন। না উঠতে পারলেও হতাশ হবার কিছু নেই।
নিজের অায়ে ডাল ভাত খাওয়ার চেয়ে শান্তি অার কিছুতে নেই।