Get on Google Play

চাকরি প্রর্থীদের সমস্যা, প্রশ্ন, মতামত এবং বিভিন্ন পেশা সর্ম্পকে আলোচনা, অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ
#2100
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক-বাংলাদেশের প্রচুর তরুণ-তরুণীর কাছে স্বপ্নের একটি চাকুরী। ডিসেম্বরের ১ তারিখে নতুন সার্কুলার দিয়েছে।
সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রথম পার্ট (এমসিকিউ অংশ)। এই অংশে ১০০ টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ১ ঘন্টা সময়ে। এই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রায় দশ হাজার জন নির্বাচিত হবেন ২য় পার্ট, অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষার জন্য। মোটেই সহজ হবেনা কিন্তু ব্যাপারটা! এখন প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করলে হাতে সময় পাবেন মোটামুটি ৫ মাসের মতো। অনেকেই আবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বেশ আগে থেকেই।

তবে মনে রাখবেন,প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষাগুলোতে ভালো করতে হলে আপনাকে কৌশলী হতেই হবে! আমরা বেশীরভাগই শুধু প্রিপারেশনের ক্ষেত্রে পড়াটার উপরেই ফোকাস করি। পড়ার বাইরেও যে কিছু মানসিক প্রস্তুতি আছে সেটা আমরা ভুলে যাই বারবার। আর এ প্রস্তুতিগুলো নিতেও কিন্তু কম সময় লাগেনা। পুরাতন অনেক অভ্যাস বদলে নিতে হয় আসলে।

যাহোক, এই পরীক্ষায় ভালো করতে কি কি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন আপনি, সে বিষয়ে আমার কিছু পরামর্শঃ
১।
বিগত ৬-৭ বছরের প্রশ্নে বিভিন্ন বিষয়ের নম্বর বন্টন ছিলো এরকমঃ বাংলা-২০, ইংরেজী-২০, গণিত ও অ্যানালাইটিক্যাল অ্যাবিলিটি-৩০,সাধারণ জ্ঞান-২০ এবং কম্পিউটার নলেজ-১০। মনে রাখবেন অন্য পরীক্ষার্থীর সাথে আপনার পার্থক্য গড়ে দেবে ইংরেজী এবং গণিত অংশে আপনার দক্ষতা। অন্য বিষয়গুলোতে সবাই কাছাকাছি নম্বর পেয়ে থাকে। বাংলা থেকে গ্রাজুয়েশন করা একজন পরীক্ষার্থী হয়তো বাংলায় ২০ এর মধ্যে পাবে ১৫, আর মোটামুটি প্রিপারেশন নেওয়া অন্য একজন পাবে ১২। কম্পিউটার সায়েন্স থেকে গ্রাজুয়েশন করা একজন কম্পিউটার নলেজ অংশে খুব বেশী পেলে পেতে পারে ৮, অন্য একজন হয়তো সেখানে পাবে ৬। সাধারণ জ্ঞান অংশেও অলমোস্ট সবাই একই রকম মার্কস পাবে। অন্যদিকে ইংরেজী আর গণিতে ভালো দখল না থাকলে পাবেন ২০ এর মধ্যে ৫ করে। আর এই দুই অংশের মাধ্যমেই প্রতিযোগীতা থেকে ছিটকে পড়বেন আপনি। কারণ অন্য অংশগুলোর মতো এখানে মুখস্থ করে ভালো করার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সুতরাং মূল ফোকাসটা ওই দুই অংশেই রাখতে হবে।

২।
এই নিয়োগ পরীক্ষার এমসিকিউ বা প্রথম অংশটি শুধুমাত্র লিখিত পরীক্ষা দেবার যোগ্যতা নিরূপন করে। কোন বছরে যদি লিখিত পরীক্ষা দিতে পারার যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয় ৪৫, তাহলে সেই এমসিকিউ পরীক্ষায় একজন ৮৫ পেলেও যা, ৪৫ পেলেও তা ই। এই ৪০ মার্কস বেশী পাওয়ার কারণে আলাদা কোন ভ্যালু অ্যাড হবেনা। দুজনেই জাস্ট লিখিত পরীক্ষা দেবার জন্য সিলেক্টেড হবে।

এবার আসি কেন এ বিষয়টি তুলে আনলাম সে প্রসঙ্গেঃ

মাঝে ২/১ বছরের প্রশ্ন বাদ দিলে মোটামুটিভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন যে বাংলাদেশে সব সরকারী চাকুরী নিয়োগ পরীক্ষার মধ্যে সবথেকে কঠিন হয় এ ব্যাপারে আশা করি কেউ দ্বিমত পোষণ করবেনা। আমি নিজে পরীক্ষা দিয়েছিলাম ২০১২ সালে। সেবছর এমসিকিউ অংশের কাট আপ মার্কস নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৪২.৫। আবার মনে করবেন না যে আমাদের ওই ব্যাচে যোগদানকারী সবাই মেধাহীন গাব ছিলো। আমরা জয়েন করেছিলাম ১৫৪ জন। তার মধ্যে ১৭ জন ছিলাম আইবিএ গ্রাজুয়েট। ৯ জন ছিলো বুয়েটের। বাকীদের মধ্যে অন্তত ৬০-৭০% ছিলো ঢাকা ইউনিভার্সিটির ভালো ভালো ডিপার্টমেন্ট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা। যাহোক, পরের ব্যাচের প্রশ্ন একটু সহজ ছিলো তুলনামূলকভাবে। এমসিকিউ অংশের কাট আপ মার্কস ছিলো ৫৮। আর ২০১৪ সালে যারা পরীক্ষা দিয়েছিলো তাদের এমসিকিউ অংশের কাট আপ নির্ধারিত হয়েছিলো মাত্র ৩৬ এ। ২০১৫ সালে সম্ভবত কোন নিয়োগ পরীক্ষা হয়নি। ২০১৬ তে এসে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যাচে আবার কাট আপ মার্কস ছিলো ২৮।
সুতরাং কেউ যদি এক্সাম দিতে গিয়ে ১০০ টি এমসিকিউ এর মধ্যে মাত্র ৫০ টি দাগিয়ে হতাশ হয়ে আন্দাজে আরও ২০ টি দাগিয়ে দেন, তাহলে আপনি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারবেন। কারণ নেগেটিভ মার্কিং কখনোই আপনাকে ক্ষমা করবেনা। প্রশ্ন যদি বেশী কঠিন হয়, তাহলে মাত্র ৪০ টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েও লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হতে পারেন আপনি। সুতরাং, ১ টি প্রশ্নের উত্তর ও আন্দাজে দাগাবেন না।

৩।
সবাইই জানেন, পরীক্ষার ১ ঘন্টা সময়ের বেশীরভাগই কিন্তু বরাদ্ধ রাখতে হবে গণিত অংশের জন্য। বাংলা, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার নলেজ আর ইংরেজী অংশের যে কয়টা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন সেগুলোর পরেই সরাসরি গণিতে চলে যেতে হবে (আপনি কোন অংশের উত্তর আগে দেবেন সেটি আপনার নিজের মতো করে ঠিক করাটাই আপনার জন্য বেস্ট)। মনে রাখবেন, সাধারণ জ্ঞানের একটি প্রশ্নের উত্তর মনে করতে পারছেন না দেখে গালে হাত দিয়ে ৫ মিনিট ধরে সেটি মনে করার চেষ্টা করলে কিন্তু আখেরে কোন লাভ হবেনা। গণিত অংশে ভালো করতে হলে এতটুকু এফিসিয়েন্সি থাকতে হবে যেন একটা গাণিতিক সমস্যা দেখে সাথে সাথেই বুঝতে পারেন যে প্রশ্নটি আপনি সলভ করবেন নাকি স্কিপ করবেন। মনে রাখবেন, যেকোন অ্যাপটিচিউড টেস্টে মূল বাধা হলো সময়। আপনাকেই ডিসিশন নিতে হবে আপনি একটা ডিফিকাল্ট প্রশ্নের পিছনে মাথার চুল ছিঁড়ে ৭-৮ মিনিট নষ্ট করে ফেলবেন, নাকি এই সময়ে সহজ সহজ ৫ টি প্রশ্নের উত্তর দেবেন। দিনশেষে কিন্তু একটাই সত্য, সব প্রশ্নের মান সমান। সুতরাং একটা কঠিন প্রশ্নের পিছনে ৭-৮ মিনিট নষ্ট না করে এই সময়ে ৫ টা প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটাই আপনার জন্য ভালো হবে।

৪।
প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষাগুলোতে একটি বড় যোগ্যতা হলো টেম্পটেশন কন্ট্রোলে রাখতে পারা। অনেকেই আন্দাজে উত্তর দিলে হয়ে যাবে শুধুমাত্র এই বিশ্বাসের উপরে ভর করে প্রচুর প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসেন। আগেই বলেছি ভাই/আপা.........নেগেটিভ মার্কিং কিন্তু কখনোই ক্ষমা করেনা! ইতিহাস সাক্ষী! সুতরাং বুঝে শুনে পরীক্ষা দেবেন।

অনেকেই হয়তো এই পোস্ট দেখে মনে মনে হাসছেন! ভাবছেন, "ব্যাটা পরীক্ষার আগে যে পোস্ট দেওয়ার কথা ছিলো সেটা এখনই দিয়ে দিছে!"
হা হা হা। ব্যাপারটা ওরকম সহজ না। আপনি কিছু স্ট্র‍্যাটেজি জেনে সরাসরি যুদ্ধে নেমে গেলে হবেনা। দীর্ঘদিন ধরে এই স্ট্র‍্যাটেজি গুলো ট্রায়াল অ্যান্ড এরর করতে হবে আপনার। সুতরাং মোটামুটি পড়া শেষ হলে এখন থেকেই ঘরের দরজা বন্ধ করে এক্সাম হলের এনভায়রনমেন্ট ক্রিয়েট করে ব্যাংকের আগের প্রশ্নগুলো সলভ করতে শুরু করেন। আর এসব স্ট্র‍্যাটেজি ভালোমতো আত্মস্থ করার চেষ্টা করেন।

সবার জন্য শুভকামনা রইলো

ফেরদৌস কবির
    Similar Topics
    TopicsStatisticsLast post
    0 Replies 
    55 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    4436 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    84 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    110 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    51 Views
    by bdchakriDesk

    Thanks for the information.

    Achieving the best SEO (Search Engine Optimization[…]

    Creating a website easily on WordPress is a popula[…]

    Creating a website on BigCommerce offers a seamles[…]