- Thu Sep 30, 2021 5:34 pm#7316
ভাষা ভাবের বাহন। বাব প্রকাশর তাগিদে ভাষার উদ্ভব। মানুষের সহজাত প্রবণতাই হলো একের ভাব অন্যের হৃদয়ে সঞ্চারিত করে একই ভাবে ভাবিত করানো। প্রাণিজগতে মানুষই একমাত্র মুখের কথা দ্বারা মনের ভাব প্রকাশ করে। জীব-জন্তু, পশু-পাখি মানুষের মতো কথা বলে না বটে, কিন্তু তাদের কণ্ঠ থেকে ধ্বনি নির্গত হয়। তবু মানুষের কথা বলাকেই আমরা ’ভাষা’ বালি, পশু-পাখির ডাককে বলি না। কারণ, মানুষ যা বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা করে ও হৃদয় দিয়ে অনুভব করে তার সবই কথার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে এবং তার সমস্ত কথারই ‘অর্থ’ থাকে। পশু-পাখির অনুভব ক্ষমতা থাকলেও তা মানুষের তুলনায় নিতান্তই অল্প, আর চিন্তাশক্তি তো তার নেই বললেই চলে। ভাষার বলেই মানুষ অন্যান্য জীবজন্তুর তুলনায় শ্রেষ্ঠ হতে পেরেছে। ভাষা মানুষের সমাজ-সংস্কৃতিকে ধারণ ও বহন করে। ভাষার মধ্য দিয়েই মানুষ তার সমাজ ও সভ্যতাকে গড়ে তুলেছে। মানুষের ভাষার শক্তি ও সম্ভাবনা অসীম।
প্রসঙ্গত ভাষাতাত্বিক মুহম্মদ আব্দুল হাই বলেছেন, ‘আমরা যেমন খাইদাই ওঠা-বসা করি ও হেঁটে বেড়াই, তেমনি সমাজ-জীবন চালু রাখবার জন্য কথা বলি, নানা বিষয়ে নানা ভাবে। মানুষের সঙ্গে মানুষের সামাজিকতা বজায় রাখতে হলে তার প্রধান উপায় কথা বলা, মুখ খোলো, আওয়াজ করা। একে অন্যের সঙ্গে সম্বন্ধ যেমনই হোক না কেন- শত্রুতার কি ভালোবাসার, চেনা কি অচেনার, বন্ধুত্বের কিংবা মৌখিক আলাপ পরিচয়ের, মানুসের সঙ্গে মানুষের যে ধ্বনিগুলোর একমাত্র শর্ত হচ্ছে সেগুলো অর্থবোধক হওয়া চাই। … কতকগুলো অর্থবোধক ধ্বনির সাহায্যে এক এক সমাজের মানুষ তাদের সামাজিক জীবন চালু রাখে। এক এক সমাজের সকল মানুষের অর্থবোধক ধ্বনির সমষ্টিই ভাষা’ সুতরাং ধ্বনিই ভাষার মূল উপাদান। ধ্বনির সৃষ্টি হয় বাগযন্ত্রের দ্বারা। গলনালী, মুখবিবর, কণ্ঠ, জিহ্বা, তালু, দন্ত, নাসিকা ইত্যাদি বাক্ প্রত্যঙ্গকে এক কথায় বলে বাগযন্ত্র। এই বাগযন্ত্রের দ্বারা উচ্চারিত অর্থবোধক ধ্বনির সাহায্যে মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যমকে বলে ভাষা। ভাষাবিজ্ঞানীগণ বিভিন্নভাবে ভাষাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। যেমন:
প্রখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির দ্বারা নিষ্পন্ন, কোনো বিশেষ জনসমাজে ব্যবহৃত, স্বতন্ত্রভাবে অবস্থিত, তথা বাক্যে প্রযুক্ত শব্দসমষ্টিকে ভাষা বলে।’
মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর মতে, ‘মানুষের কণ্ঠনিঃসৃত বাক্ সংকেতের সংগঠনকে ভাষা বলা হয়। অর্থাৎ বাগযন্ত্রের দ্বারা সৃষ্ট অর্থবোধক ধ্বনির সংকেতের সাহায্যে মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যমই হবে ভাষা।’
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ভাষার সংজ্ঞার্থ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘মানবজাতি যে ধ্বনি বা ধ্বনিসকল দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে তার নাম ভাষা।’
ড. মুহম্মদ এনামুল হকের মতে, ‘মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে অপরের বোধগম্য যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি উচ্চারণ করে থাকে, সেই ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে ভাষা বলা হয়।’
বহুভাষাবিদ পণ্ডিত জ্যোতিভূষণ চাকী বলেন, ‘ভাষা মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির দ্বারা নিষ্পন্ন এমন শব্দসমষ্টি যা স্বতন্ত্রভাবে বিশেষ কোনো জনসমাজে ব্যবহৃত।’
দেশ, কাল ও পরিবেশভেদে ভাষার পার্থক্য ঘটে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থান করে মানুষ আপন মনোভাব প্রকাশের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বস্তু ও ভাবের জন্য বিভিন্ন ধ্বনির সাহায্যে শব্দের সৃষ্টি করেছে। সে সব শব্দ মূলত নির্দিষ্ট পরিবেশে মানুষের বস্তু ও ভাবের প্রতীক মাত্র। এজন্যই আমরা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষার ব্যবহার দেখতে পাই। একেক দেশের লোক একেক ভাষায় কথা বলে। যেমন বাঙালিরা বলে বাংলা ভাষা, ইংল্যান্ডের লোকেরা বলে ইংরেজি ভাষা, ফরাসিরা কথা বলে ফরাসি ভাষায়, রুশ দেশের অধিবাসীরা বলে রুশ ভাষা ইত্যাদি।
সংগৃহীত:-
প্রসঙ্গত ভাষাতাত্বিক মুহম্মদ আব্দুল হাই বলেছেন, ‘আমরা যেমন খাইদাই ওঠা-বসা করি ও হেঁটে বেড়াই, তেমনি সমাজ-জীবন চালু রাখবার জন্য কথা বলি, নানা বিষয়ে নানা ভাবে। মানুষের সঙ্গে মানুষের সামাজিকতা বজায় রাখতে হলে তার প্রধান উপায় কথা বলা, মুখ খোলো, আওয়াজ করা। একে অন্যের সঙ্গে সম্বন্ধ যেমনই হোক না কেন- শত্রুতার কি ভালোবাসার, চেনা কি অচেনার, বন্ধুত্বের কিংবা মৌখিক আলাপ পরিচয়ের, মানুসের সঙ্গে মানুষের যে ধ্বনিগুলোর একমাত্র শর্ত হচ্ছে সেগুলো অর্থবোধক হওয়া চাই। … কতকগুলো অর্থবোধক ধ্বনির সাহায্যে এক এক সমাজের মানুষ তাদের সামাজিক জীবন চালু রাখে। এক এক সমাজের সকল মানুষের অর্থবোধক ধ্বনির সমষ্টিই ভাষা’ সুতরাং ধ্বনিই ভাষার মূল উপাদান। ধ্বনির সৃষ্টি হয় বাগযন্ত্রের দ্বারা। গলনালী, মুখবিবর, কণ্ঠ, জিহ্বা, তালু, দন্ত, নাসিকা ইত্যাদি বাক্ প্রত্যঙ্গকে এক কথায় বলে বাগযন্ত্র। এই বাগযন্ত্রের দ্বারা উচ্চারিত অর্থবোধক ধ্বনির সাহায্যে মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যমকে বলে ভাষা। ভাষাবিজ্ঞানীগণ বিভিন্নভাবে ভাষাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। যেমন:
প্রখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির দ্বারা নিষ্পন্ন, কোনো বিশেষ জনসমাজে ব্যবহৃত, স্বতন্ত্রভাবে অবস্থিত, তথা বাক্যে প্রযুক্ত শব্দসমষ্টিকে ভাষা বলে।’
মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর মতে, ‘মানুষের কণ্ঠনিঃসৃত বাক্ সংকেতের সংগঠনকে ভাষা বলা হয়। অর্থাৎ বাগযন্ত্রের দ্বারা সৃষ্ট অর্থবোধক ধ্বনির সংকেতের সাহায্যে মানুষের ভাব প্রকাশের মাধ্যমই হবে ভাষা।’
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ভাষার সংজ্ঞার্থ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘মানবজাতি যে ধ্বনি বা ধ্বনিসকল দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে তার নাম ভাষা।’
ড. মুহম্মদ এনামুল হকের মতে, ‘মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে অপরের বোধগম্য যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি উচ্চারণ করে থাকে, সেই ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে ভাষা বলা হয়।’
বহুভাষাবিদ পণ্ডিত জ্যোতিভূষণ চাকী বলেন, ‘ভাষা মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাগযন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত ধ্বনির দ্বারা নিষ্পন্ন এমন শব্দসমষ্টি যা স্বতন্ত্রভাবে বিশেষ কোনো জনসমাজে ব্যবহৃত।’
দেশ, কাল ও পরিবেশভেদে ভাষার পার্থক্য ঘটে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থান করে মানুষ আপন মনোভাব প্রকাশের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বস্তু ও ভাবের জন্য বিভিন্ন ধ্বনির সাহায্যে শব্দের সৃষ্টি করেছে। সে সব শব্দ মূলত নির্দিষ্ট পরিবেশে মানুষের বস্তু ও ভাবের প্রতীক মাত্র। এজন্যই আমরা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষার ব্যবহার দেখতে পাই। একেক দেশের লোক একেক ভাষায় কথা বলে। যেমন বাঙালিরা বলে বাংলা ভাষা, ইংল্যান্ডের লোকেরা বলে ইংরেজি ভাষা, ফরাসিরা কথা বলে ফরাসি ভাষায়, রুশ দেশের অধিবাসীরা বলে রুশ ভাষা ইত্যাদি।
সংগৃহীত:-