Get on Google Play

দৈনন্দিন বিজ্ঞান বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান
#1166
ইভিএম— যার পূর্ণরূপ হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন যা ভোটারের পরিচয় গোপণ রেখে ভোট দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ভারতের সাধারণ ও রাজ্য সরকার নির্বাচনে ব্যবহৃত হয়। ১৯৮০ সালে এম.বি. হানিফা প্রথম ইন্ডিয়ান বা ভারতীয় ভোটিং মেশিন আবিষ্কার করেন। তবে পাঞ্চ কার্ডের মাধ্যমে ভোট প্রদানের পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৯৬০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে। অনেকের মতে, সেটারই উন্নয়নের ফল আজকের ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম।
এই ইভিএম ১৯৮২ সালে ভারতের কেরালায় ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমানে ভারত ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, নেদারল্যান্ড, পেরু, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, ভেনেজুয়েলা, ফিলিপাইন প্রভৃতি দেশে ইভিএম ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশে পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে আংশিকভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল। আর ৫ জানুয়ারি, ২০১২ সালে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে প্রথম সবগুলো কেন্দ্রের ভোট ইভিএম এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছিল।

সুবিধা :
ইভিএম ব্যবহারের অনেকগুলো সুবিধা রয়েছে। সুবিধাগুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক:
• ইভিএম ভোট প্রদানের সময় কমিয়ে দেয়।
• এটি ভোট গণনা করা ও ফলাফল ঘোষণার সময় কমিয়ে দিয়েছে।
• ইভিএম পরিবেশবান্ধব। কারণ এতে কাগজের ব্যালট পেপার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না।
• শুরুতে এর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, এটিতে ভোট কারচুপি করা যাবে এবং ভোটারের নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হবে। কিন্তু এই অভিযোগের এখন পর্যন্ত কোনো সত্যতা মেলেনি। এতে শক্ত নিরাপত্তা চিপ থাকায় প্রোগ্রাম পরিবর্তন করা যায় না। পরিবর্তন করতে গেলে পুরো প্রোগ্রাম নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
• ইভিএম একই নির্বাচকমণ্ডলীর অধীনে সর্বোচ্চ ৬৪ জন প্রার্থীর তথ্য ধারণ ও ভোট গ্রহণ করতে পারে।
• এর ভোট ১০ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। সাধারণত একটি ইভিএম ১৫ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
• একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র একটি ভোটই দিতে পারবেন। কারণ ইভিএম সংশ্লিষ্ট ভোটারের বাটনের প্রথম চাপটিকেই নিবন্ধন করে নিবে।
• সাধারণত প্রতি মিনিটে ৫টি ভোট দেওয়া যায়।
• এটির দ্বারা ভোট প্রদান করা খুবই সহজ এমনকি প্রতিবন্ধীদের জন্যও সহজ হয়েছে।
• ৬ ভোল্টের একটি অ্যালকালাইন ব্যাটারির মাধ্যমে এই যন্ত্র চলে। তাই যেখানে বিদ্যুত নেই সেখানেও ব্যবহার করা যায়।

ইভিএম যেভাবে কাজ করে :
সাধারণত ইভিএম দুটি যন্ত্রের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে। এর একটি হচ্ছে কন্ট্রোল ইউনিট এবং অপরটি হচ্ছে ব্যালটিং ইউনিট। প্রিজাইডিং অফিসার কন্ট্রোল ইউনিট চালাবেন। তিনি কন্ট্রোল ইউনিট থেকে ব্যালটিং ইউনিট সক্রিয় করে দিবেন। তখন ভোটার ব্যালট বাটন চেপে তার তথ্য নিবন্ধন করবেন। এই তথ্য নিবন্ধিত করার মাধ্যমে একজন ভোটার কেবলমাত্র একবারই ভোট দিতে পারবেন। পরবর্তী ভোটারের জন্য পুনরায় প্রিজাইটিং অফিসার ব্যালটিং ইউনিট সক্রিয় করে দিবেন। যদি কোনো ভোটার পুনরায় ভোট দিতে চান তবে ইভিএম স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোট গ্রহণ করবে না।

সীমাবদ্ধতা :
ইভিএম এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে -
• ভাষাগত সমস্যা হতে পারে। যেমন, ভারতের ক্ষেত্রে যাদের পছন্দনীয় ভাষা ইংরেজি বা ভিন্নদেশে থাকার কারণে ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হয়েছেন তারা কিছুটা সমস্যায় পড়েন। কারণ এই যন্ত্রে প্রার্থীর নামের অক্ষর সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ভাষার সাথে মিল রেখে নির্ধারণ করা থাকে।
• প্রত্যেকটি ব্যালট মাত্র ১৬ জন প্রার্থীর তথ্য ধারণ করতে পারে বলে অতিরিক্ত প্রার্থীর থাকলে আরও ৪টি ব্যালট ম্যানুয়ালি যোগ করে নিতে হয়। এভাবে ৪টি ব্যালট এর মাধ্যমে ৬৪ জন প্রার্থীর তথ্য ধারণ ও ভোট গ্রহণ করা যায়।
• একটি ইভিএম মাত্র ৩৮৪০ ভোট গণনা করতে পারে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্ব নানাভাবে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে নিত্য নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এরই ফলে হয়তো আমাদের দেশেও পুরোপুরিভাবে চালু হতে পারে ইভিএম। তবে বরাবরের মতোই নতুন প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নিতে ভোটারাও কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতেই পারেন।
======
সংগৃহীতঃ আদ্যিত অভি

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]