Get on Google Play

আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান
By masum
#1357
১.
# কাশ্মিরের পরিচয়:
ক) ১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত, কাশ্মীর শব্দটি ভৌগোলিকভাবে শুধু বিশাল হিমালয় এবং পীর পঞ্জল পর্বতমালার উপত্যকাকে নির্দেশ করা হতো।
খ)বর্তমানে কাশ্মীর বলতে বোঝায় একটি বিশাল অঞ্চল
i) ভারতীয়-শাসিত রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর ( কাশ্মিরের প্রায় ৪৩% শাসন করে )
ii) পাকিস্তানি-শাসিত গিলগিট-বালতিস্তান এবং আজাদ কাশ্মীর প্রদেশ
(৩৭% শাসন) এবং
iii)চীন-শাসিত আকসাই চীন এবং ট্রান্স-কারাকোরাম ট্রাক্ট অঞ্চলসমূহ নিয়ে গঠিত।
২.
# কাশ্মিরের ইতিহাস:
(সংঘাত পূর্ব সময়)
ক)পঞ্চম শতাব্দীর পূর্ববর্তী সময়ে কাশ্মীর প্রথমে হিন্দুধর্মের কেন্দ্রে পরিনত হয়।
খ)৫ম শতাব্দীর পরে বৌদ্ধধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়।
গ)পরবর্তীতে নবম শতাব্দীতে কাশ্মীরে শৈব মতবাদের উত্থান ঘটে।
ঘ)ত্রয়োদশ থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীতে কাশ্মীরে ইসলাম ধর্মের বিস্তার ঘটে। ঙ)পরবর্তী পাঁচ শতাব্দীব্যাপী কাশ্মীরে মুসলিম শাসন বজায় ছিল।
চ)এর মধ্যে মুঘল সম্রাটরা এবং আফগান দুররানী সম্রাটরা কাশ্মীর শাসন করেন। ছ)১৮১৯ সালে রঞ্জিত সিংহের নেতৃত্বে শিখরা কাশ্মীর দখল করে।
জ)১৮৪৬ সালে প্রথম ইঙ্গ—শিখ যুদ্ধে ইংরেজদের নিকট শিখরা পরাজিত হয়।
ঝ) ১৮৪৬ সালে বৃটিশ সরকার ৭৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে হিন্দু সর্দার গোলাব সিং এর নিকট মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মীর রাজ্যটি বিক্রি করে দেয়।
৩.
# কাশ্মির সমস্যার শুরু:
ক) ১৮৪৬ এর পর থেকে গুলাব সিং শাসন এবং পর্যায়ক্রমে তা হরি সিং এর সময় উত্তেজনা শুরু হয়।
খ) ১০০ বছর পর ১৯৪৭ সালে হিন্দু রাজা হরি সিং এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কাশ্মীরিরা বিদ্রোহ ঘোষনা করে।
গ) অর্থাৎ সমস্যার সূচনা হয় ১৯৪৭ এর দেশভাগের সময় থেকে।
ঘ) হরি সিং মুসলিমদের আন্দোলন দমাতে না পেরে ভারতের সহযোগিতা চায়।
ঙ) তখন হরি সিং কে সহযোগিতার একটি শর্ত জুড়ে দেয় ভারত, আর তা হল কাশ্মীরকে ভারতের সাথে একীভূতকরণ।
চ) হরি সিং এর সাথে চুক্তি অনুযায়ী ১৯৪৭ সালের ২৭ অক্টোবর ভারতীয় সামরিক বাহিনী কাশ্মীরে প্রবেশ করে।
ছ) কাশ্মীরিদের উপর চলে নিপীড়ন। ভারতীয় সামরিক বাহিনী বিরাট অংশের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়।
জ)সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের কারন ক্ষুদ্ধ হয়ে কাশ্মীরিরা তাদের অধিকার আদায়ের দাবি জানায়।
ঝ) তাদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়ায় পাকিস্তান নামের মুসলিম দেশ। পাকিস্থান কাশ্মীরিদের পক্ষ হয়ে ভারতের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় ১৯৪৭ সালেই।
#১৯৪৭ কাশ্মির যুদ্ধের ফলাফল কি?
ক) পাকিস্তান কাশ্মীরিদের নিয়ন্ত্রণে এক তৃতীয়াংশ ভূখন্ড ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়। এর নাম
"আজাদ কাশ্মীর "
খ)১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতি হয়।
৪.
# ভারতে কাশ্মির প্রেক্ষাপটঃ
ক)ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে ১৯৪৭, ১৯৬৫ এবং ১৯৯৯-এ অন্ততঃ তিনটি যুদ্ধ হয়েছে।
খ)কাশ্মীরি বিদ্রোহীরা এবং ভারত সরকারের মধ্যে বিরোধের মূল বিষয়টি হল স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন।
গ)কাশ্মীরের গণতান্ত্রিক উন্নয়ন ১৯৭০-এর শেষভাগ পর্যন্ত ছিল সীমিত এবং ১৯৮৮ সালের মধ্যে ভারত সরকার কত্তৃক প্রদত্ত বহু গণতান্ত্রিক সংস্কার বাতিল হয়ে গিয়েছিল ।
ঘ) অহিংস পথে অসন্তোষ জ্ঞাপন করার আর কোনো রাস্তাই খোলা ছিল না তাই ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য বিদ্রোহীদের সমর্থন নাটকীয়ভাবে বাড়তে থাকে।
ঙ) ২০০৮ সালের নির্বাচনে বহু সংখ্যক ভোটার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।
চ) জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার এই নির্বাচনকে সাধারণভাবে নিরপেক্ষ হিসাবে গণ্য করে। ছ)এই নির্বাচনে জয়লাভ করে ভারতপন্থী জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশানাল কনফারেন্স রাজ্যে সরকার গঠন করে।
জ)ভয়েস অফ আমেরিকা অনুযায়ী, বহু বিশ্লেষকের মতে এই নির্বাচনে উচ্চ সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি - কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের ভারতের শাসনকে সমর্থন করার ইঙ্গিত দেয়।
ঝ)কাশ্মীরের একজন বিশিষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাজ্জাদ লোন যদিও দাবি করেন "উচ্চ সংখ্যক ভোটদানের হার"-কে কখনই কাশ্মীরিরা যে আর স্বাধীনতা চান না তার একটি ইঙ্গিত হিসাবে গ্রহণ না করা হয়।
৫.
# কাশ্মীরিদের অবস্থান ও চাওয়া-পাওয়া
দুইভাগে বিভক্ত :
ক)একদল স্বাধীন কাশ্মীরের স্বপ্ন দেখে খ) পক্ষ চায় পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হতে। # কেন পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হতে চায় কাশ্মীর?
# উত্তর:কারন তারা ভাবে যদি আমরা স্বাধীন হয়েও যাই, তারপরও ভারত যেকোন সময় আগ্রাসন চালাতে পারে। সেজন্য পাকিস্থানের মত একমাত্র পারমানবিক শক্তিধর মুসলিম রাষ্টের সাথে থাকাটাই তারা নিরাপদ মনে করে।
৬.
# ভারতের অবস্থান ও যুক্তি :
ক) ভারত কাশ্মিরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে।
খ) ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি অনুযায়ী পাক-ভারত সকল সমস্যা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
গ) ১৯৪৭ সালের পর ভারত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাশ্মীরিরা অনেকগুলো জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশগ্রহন করে কাশ্মীর কে ভারতের অংশ হিসেবে মেনে নিয়েছে।
ঘ) কাশ্মীরি মুজাহিদদের সাহায্য করে পাকিস্তানিরা অপরাধ করেছে।
৭.
# পাকিস্তানের অবস্থান ও যুক্তি:
ক) ৪৭ সালের স্বাধীনতার মূলনীতি অনুযায়ী কাশ্মির হয় স্বাধীন হবে না হয় পাকিস্তানের অংশ হবে।
খ)কাশ্মিরের মহারাজা হরি সিং এর একক সিদ্ধান্তে কাশ্মিরিদের ভাগ্য নির্ধারিত হতে পারে না।
গ)কাশ্মিরে একটি গনভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘের অনুমোদন রয়েছে।
ঘ) জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৪৮ সালে গণভোটের প্রস্তাব ও নিরাপত্তা পরিষদে বহুবার আলোচিত হওয়ায় একে দ্বিপাক্ষিক ব্যাপার বলা যাবে না।
ঙ) পাকিস্তান চায় আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় তৃতীয় কোন পক্ষের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে।
চ) সিমলা চুক্তির দোহাই দিয়ে এটিকে দ্বিপাক্ষিক বলা যাবে না। কারন সিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরের জনগণকে বাইরে রাখা হয়েছিল।
.
৮.
# জাতিসংঘ# জাতিসংঘের অবস্থান:
ক) ১৯৪৮ সালে গনভোটের প্রস্তাব জানায় যা অপূর্নই থেকে যায়।
খ) ২০১৬ সালে তৎকালীন নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘের রুশ দূত ভিটালি চারকিন বলছিলেন
বিতর্কিত কাশ্মির সীমান্ত নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে সঙ্কট চলছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তা নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না।
৯.
# রাশিয়া ও যুক্তরাষ্টের অবস্থান:
ক)রাশিয়া বরাবরই কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
খ) রুশ দূত ভিটালি চারকিন নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট থাকা কালীন তা আবারও স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়।
গ) যুক্ত্রাষ্ট্র কোন পক্ষকে তার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চায় না।
ঘ) যদি কাশ্মির সমস্যায় উভয় পক্ষ যুক্তরাষ্টের মধ্যস্থতা মেনে নেয় তাহলে সালিসি ভূমিকা পালন করতে রাজি আছে।
১০.
# সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি কাশ্মীরে ভারতের একটি সেনা ঘাটিতে হামলা চালায় এক দল সশস্ত্র ব্যাক্তি এতে
৭ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। ভারত এর জন্য পাকিস্তান কে দায়ি করছে।
অপর দিকে পাকিস্তান মনে করে ভারত
তার অভ্যন্তরীণ ঘটনার সাথে পাকিস্তানকে জড়ানো একটি চিরচায়িত ব্যাপার।
১১.
# সমাধান কি??
এর সমাধান অনেক জটিল। আরাকান ইস্যুর মতই। ভারত পাকিস্তান উভয়ে পারমানবিক শক্তিধর এবং সামরিক ভাবে প্রায় সমকক্ষ সেজন্য সমাধান হবার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
কিন্তু ১৯৪৭ এর দেশভাগের মূলনীতি কি ছিল?
ক) মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে গঠিত হবে পাকিস্থান।
খ)হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে হবে হিন্দুস্থান।
গ) অন্যান্য স্বাধীন রাজ্য গুলো চাইলে স্বাধীন থাকতে পারবে অথবা যেকারো সাথে ইচ্ছানুযায়ী যুক্ত হতে পারবে।
# সেই হিসেবে কাশ্মীর হয় স্বাধীন থাকবে অথবা যেকারো সাথে যুক্ত হবে।
তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কথা হল কাশ্মিরের জনগন ই ঠিক করবে এর সমাধান। সেজন্য তাদের ইচ্ছার মুল্যায়নে জাতিসংঘকে ভূমিকা র

Collected: Naimur Rahman Shohag

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]