Get on Google Play

আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সাধারণ জ্ঞান
#6885
আবারও পুরোনো বৃত্তে মিয়ানমার। ৪ জানুয়ারি ১৯৪৮ স্বাধীন হওয়ার পর দেশটিতে প্রায় দীর্ঘ ৫০ বছর সেনাশাসন ছিল। ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন প্রথম রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ আবারও মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। এরপর সংবিধানের ৪১৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দেশজুড়ে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সেই সাথে সাবেক লে. জেনারেল মিন্ট সুয়েকে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়।
সেনা অভ্যুত্থানের কারণ
৩ জুলাই ২০২১ মিয়ানমারের বর্তমান সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বয়স ৬৫ বছর পূর্ণ হবে। আইন অনুসারে তখন তার অবসরে যেতে হবে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে তিনি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলেন। ৮ নভেম্বর ২০২০ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সেনা সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি’র (USDP) ব্যাপক ভরাডুবির ফলে ব্যর্থ হয়ে যায় তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন। ২০০৮ সালের সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের ২৫ ভাগ আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে সেনা সদস্যদের জন্য। সে হিসাবে মিয়ানমার সংসদে সেনাসদস্যদের মোট সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ১৬৬টি। মিন অং হ্লাইংয়ের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য সংরক্ষিত আসনের বাইরে USDP ’র আরো ১৬৭টি আসনে জয় লাভের দরকার ছিল। কিন্তু দলটি সংরক্ষিত আসনের বাইরে জয় পায় মাত্র ৩৩টি আসনে। সংরক্ষিত আসন ছাড়া ৪৯৮টি আসনের মধ্যে সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (NLD) জয় পায় ৩৯৬ আসনে। নির্বাচনে ভরাডুবির পর দেশটির সামরিক বাহিনী নির্বাচনে ‘কারচুপি’র অভিযোগ তোলে। অবশেষে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ নতুন সংসদ বসার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান মিন অং।
রাজনীতিতে সেনাবাহিনী
১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী স্থানীয়ভাবে তাতমাডো নামে পরিচিত। এর মূল শাখা হলো- সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনী। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দেশটির স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন জেনারেল অং সান, যাকে দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের ছয় মাস আগে ১৯ জুলাই ১৯৪৭ প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হন তিনি। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর উ নু’র নেতৃত্বে সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ থেকে জেনারেল নে উইন ছিলেন সেনাবাহিনীর কমান্ডার। ২৯ অক্টোবর ১৯৫৮ ক্ষমতাসীন এন্টি-ফ্যাসিস্ট পিপলস ফ্রিডম লীগ (AFPFL) -এ ভাঙন দেখা দিলে জেনারেল নে উইন তৎকালীন সরকারকে সরিয়ে দিয়ে তার নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬০ মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের পর উ নু’র নেতৃত্বে আবারও বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২ মার্চ ১৯৬২ নে উইন দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটান। ৪ জুলাই ১৯৬২ নে উইন বার্মা সোশ্যালিস্ট প্রোগ্রাম পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন ও দেশের একমাত্র বৈধ দল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন। ৯ নভেম্বর ১৯৮১ জেনারেল নে উইন অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল সান ইউয়ের কাছে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ছেড়ে দেন। কিন্তু BSPP’র চেয়ারম্যান হিসেবে দেশটির কর্তৃত্ব তার হাতেই বিদ্যমান থাকে। ১৯৮৮ সালে অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে ২৩ জুলাই BSPP’র দলীয় প্রধান থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৮৮ জেনারেল স মং ক্ষমতা দখল করেন। ৩০ মার্চ ২০১১ জান্তা সরকারের নেতা জেনারেল থান সুয়ে পদত্যাগ করেন। আর এর মাধ্যমে অবসান ঘটে প্রায় ৫০ বছর ধরে চলা সামরিক শাসন। ২০০৮ সালে সামরিক জান্তার তৈরি করা সংবিধানে দেশটির পার্লামেন্টে সেনাবাহিনী কোটায় ২৫% আসন বরাদ্দ রয়েছে। শুধু আসন সংরক্ষিত রাখাই নয়, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীর হাতে রয়েছে। এ তিনটি বিষয় হচ্ছে- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়। যেহেতু মিয়ানমারের পার্লামেন্টে নির্ধারিত আসনের এক-চতুর্থাংশ নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির সেনাবাহিনী, তাই যে কোনো পরিবর্তনের জন্য সামরিক আইনপ্রণেতাদের সমর্থন প্রয়োজন।

    ৬ হাজারি ক্লাবে প্রথম বাংলাদেশি : প্রথম বাংলাদেশি […]

    ১. পিএল ও কখন গঠিত হয়?- ১৯৬৪ সালে । ২. পিএলও এর স[…]

    ১.যুদ্ধ পরাধীদের বিচার সংক্রান্ত সংবিধানের অনুচ্ছে[…]