Get on Google Play

লিখিত পরীক্ষা বিষয়ক
#1358
অভিজিৎ বসাক
বিসিএস ( প্রশাসন)
৩৩তম বিসিএস

সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে সঠিক তথ্য সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারলে গণিতের মতোই ভালো নম্বর তুলতে পারবেন। প্রশ্নের উত্তর বিস্তৃত না করে প্রয়োজনীয় চিত্র, উদাহরণ, রাসায়নিক সংকেত ও চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে। প্রথমেই সিলেবাস ও বিগত বছরের প্রশ্নগুলো ভালোমতো দেখে নিতে হবে। বিগত বছরের প্রশ্নের ধরন দেখলে ঠিক কী ধরনের প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়, সে সম্পর্কে আপনার ভালো একটি ধারণা হয়ে যাবে।

আমরা নবম-দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিজ্ঞানের যে বইগুলো পড়ে এসেছি, ওই বইগুলো থেকেই সিলেবাসের বেশির ভাগ টপিক খুঁজে পাবেন। কিছু টপিক খুঁজে না পেলে রেফারেন্স অথবা গাইড বই কিংবা ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে পারেন। বিগত বছরের প্রশ্ন লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন, কিছু কমন ও গুরুত্বপূর্ণ টপিক থেকেই বেশির ভাগ হয়েছে। প্রথমে এ টপিকগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, চিত্র, সংকেত—এগুলোর একটা তালিকা করে ফেলুন। এরপর এই গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো ভালোমতো পড়া শেষ হলে বাকি টপিকগুলো পড়তে শুরু করবেন।
আলো, শব্দ, চুম্বকত্ব:এ বিষয়গুলো নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে পেয়ে যাবেন। প্রথমেই বেসিক বিষয়গুলো ভালোমতো শিখে নিতে হবে। তাহলে বিজ্ঞান পড়তে চাপ তো লাগবেই না, বরং মজা পাবেন। বইতে সুন্দর একটি চিত্রের সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের তড়িৎ-চুম্বক তরঙ্গগুলো দেখানো হয়েছে। এই একটি চিত্র বুঝতে পারলেই আলোর বিভিন্ন রং, আলোর বর্ণালি, তড়িৎ-চুম্বক বর্ণালিসহ আরো অনেক বিষয় শিখে নিতে পারবেন। আমরা মাইক্রোওয়েভ ওভেন ব্যবহার করি। এক্স-রে, মাইক্রোওয়েভ ওভেন—এগুলোও আলোর মতো এক ধরনের তড়িৎ-চুম্বকতরঙ্গ ছাড়া কিছুই নয়। পার্থক্য শুধু তরঙ্গদৈর্ঘ্যে। শব্দও এক ধরনের তরঙ্গ। তবে এটি অণুদৈর্ঘ্যতরঙ্গ। এই তরঙ্গগুলোর কম্পাঙ্ক, তরঙ্গদৈর্ঘ্য উল্লখ করে উত্তর দিতে হবে। আর সঙ্গে চিত্র ব্যবহার করতে হবে। মাথায় রাখবেন, উত্তরের শুরুটা যেন সুন্দর আর তথ্যভিত্তিক হয়।

এসিড, ক্ষার, লবণ ও পানি:এই টপিকগুলো শুরু করার আগে নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্য বই (রসায়ন) থেকে অণু, পরমাণু ও আয়ন সম্পর্কে ভালোমতো শিখে নিতে হবে। সঙ্গে নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইটাও দেখতে হবে। তাহলে অর্ধেক চাপ এখানেই শেষ হয়ে যাবে। বই থেকে পানির গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক, কোনটার PH কত, পানিদূষণের কারণ-প্রভাব এই টাইপের বিষয়গুলো পয়েন্ট আকারে শিখে নেবেন। বর্ণনামূলক উত্তর না দিয়ে তথ্যভিত্তিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

খাদ্য ও পুষ্টি:এ টপিকগুলোতে যতটা সম্ভব উদাহরণ দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজন হলে একটু বিস্তারিত লেখতে হবে। খাদ্য ও পুষ্টি অংশটুকু নবম-দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বই থেকে শিখতে পারেন। ভিটামিন বা আমিষের অভাবে কী কী রোগ হয়, কোন খাদ্যে কোন উপাদানের পরিমাণ কতটুকু, দৈনিক কী পরিমাণ ফল খাওয়া উচিত—প্রয়োজন অনুসারে এসব তথ্য উপস্থাপন করতে হবে।

প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ, বায়ুমণ্ডল:প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ, বায়ুমণ্ডলসংক্রান্ত বিষয়গুলো নবম-দশম শ্রেণির ভূগোল বইয়ে ও সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে পেয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে বিগত বছরগুলোর প্রশ্নগুলো ভালো করে পড়ে নিতে হবে। সঙ্গে যেকোনো গাইড বই দেখতে পারেন। বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের নাম, উচ্চতা, উপাদান, কোন স্তরের ভূমিকা এ তথ্যগুলো দিয়ে উত্তর করলে অবশ্যই ভালো মার্ক পাওয়া যাবে।
বায়োটেকনোলজি, রোগ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা:বায়োটেকনোলজি অংশটা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বই মিলিয়ে পড়লে ডিটেইল পাবেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ টপিকই বংশগতি বিজ্ঞান নিয়ে। DNA, RNA বা ক্রমোজম বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে চিত্র ও রাসায়নিক সংকেতসহ দিতে হবে। উত্তরের শুরুর অংশে DNA-এর আবিষ্কারক, কত সালে আবিষ্কার করা হয়, এ ধরনের তথ্যভিত্তিক জিনিস দিয়ে শুরু করবেন। DNA, RNA, ভাইরাসগুলোর নাম, কোন ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার কারণে কোন রোগ হয়—এগুলো উদাহরণসহ দিতে হবে। কোন কোন কাজে ন্যানোটেকনোলজির ব্যবহার রয়েছে—এগুলো পয়েন্ট আকারে দিতে হবে।
কম্পিউটার প্রযুক্তি:কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ আমাদের ব্যবহারিক জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এ টপিকগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি বই থেকে শিখবেন। বিভিন্ন অংশের কাজ পয়েন্ট আকারে দিতে হবে। প্রয়োজন হলে চিত্র ব্যবহার করবেন।

তথ্য-প্রযুক্তি:ডাটা কমিউনিকেশন, ডাটাবেজ সফটওয়্যার, LAN, MAN, WAN নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি বইতে সুন্দর করে লেখা আছে। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের দায়িত্ব, ফেসবুক-টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম, ব্লগের মতো টপিকগুলো মজা নিয়ে শিখবেন। এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য চার্ট করে ফেলবেন। তাহলে মনে রাখতে সুবিধা হবে।

ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস প্রযুক্তি:এ অংশটা একটু বড়। তবে পরিকল্পনা করে পড়লে সময়ের মধ্যেই শেষ করতে পারবেন। ও’হমের সূত্র, কার্শফের ভোল্টেজ সূত্র, কার্শফের তড়িৎ প্রবাহের সূত্র—এ সূত্রগুলো খাতায় একসঙ্গে লিখে শিখে ফেলবেন। ইলেকট্রনিক ডিভাইস, রোধ, ক্যাপাসিটর, আইসি, সেমিকন্ডাক্টর, টেলিভিশন, রাডার—এ ধরনের জিনিসের সঙ্গে একটির অন্যটির সম্পর্ক রয়েছে। এগুলো একসঙ্গে পড়বেন এবং কাজ, গুরুত্ব ইত্যাদি পয়েন্ট আকারে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এ টপিকগুলো নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্য বই (পদার্থবিজ্ঞান) থেকে পড়তে হবে এবং সঙ্গে নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইটাও দেখতে হবে।

সময় ও নম্বর অনুযায়ী বিভিন্ন টপিক ভাগ করে ফেলুন। পরীক্ষার আগে কোনোভাবেই অন্য কিছুতে মনোযোগ না দিয়ে শুধু পড়া ও লেখার অনুশীলন করে যান। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। সফলতা আসবেই।
আজ এ পর্যন্তই থাক। সবাই ভাল থাকবেন।

Put your heart, mind, and soul into even your smallest acts. This is the secret of success.
--- Swami Sivananda
nabila liked this
    Similar Topics
    TopicsStatisticsLast post
    0 Replies 
    1211 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    210 Views
    by bdchakriDesk
    1 Replies 
    838 Views
    by tasnima
    0 Replies 
    26 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    25 Views
    by bdchakriDesk

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]