Get on Google Play

অনুপ্রেরণামুলক গল্প, বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী, ইতিবাচক আচার-আচারন ইত্যাদি
#1138
অগ্রণী ব্যাংক এর "সিনিয়র অফিসার" পদে বিএসসির (ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি) আন্ডারে আমার প্রথম ভাইভা। তারপর বিএসসির আন্ডারে একে একে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর অফিসার, ও সিনিয়র অফিসার পদে মোট আটটি ভাইভাতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে যতগুলো ব্যাংক পরীক্ষা দিয়েছি, তার সবগুলোতেই ভাইভা পর্যন্ত যাবার সুযোগ হয়েছে, আল-হামদুলিল্লাহ :)

প্রথম সাফল্য ধরা দেয় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এর "অফিসার" পদে। তারপর জনতা ব্যাংকের "এসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার (RC)", বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এর "অফিসার (ক্যাশ)", অগ্রনী ব্যাংক এর "অফিসার" পদেও নিয়োগের জন্যে চূড়ান্তভাবে মনোনিত হই। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এর "অফিসার" পদে যোগদান করি। বিকেবিতে যোগদান করার পর অফিসার লেভেলে আর কোনও পরীক্ষা দেইনি। সোনালী ব্যাংক এর "অফিসার" ও "অফিসার-ক্যাশ" এই দুইটা পদের ভাইভাতেও অংশগ্রহণ করিনি। ***অফিসার পদে অন্য যে তিনটা জব হয়েছে সেগুলার ভাইবা বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এর "অফিসার" পদের চূড়ান্ত রেজাল্টের আগেই সম্পন্ন হয়েছিলো, নাহয় একই গ্রেডে ভাইভা দিয়ে সিট ব্লক করতাম না। সম্প্রতি পল্লী বিদ্যুৎ এর "এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (অর্থ-হিসাব)" পদে [***কোটামুক্ত] নিয়োগ পাওয়ায় বিকেবির জবটা ছেড়ে দিয়েছি। এরপর জনতা ব্যাংকের "এক্সিকিউটিভ অফিসার" পদেও ভাইভার জন্যে ডাক পেয়েছি, কম্বাইন্ড সিনিয়র অফিসারেও ডাক পাবো ইনশা-আল্লাহ (পল্লী বিদ্যুৎ-এ ঢুকার আগে রিটেন দেয়া)। মেবি এই ভাইভাগুলোও দেয়া হবে না।

মোট আটটি ভাইভা দিয়েছি (যার মধ্যে পাঁচটিই সমগ্রেডে), দুইটি ভাইভা দেইনি, আরও একটা মেবি দেয়া হবে না। অর্থাৎ, আমি এগারোটা ভাইভায় ডাক পেয়েছি (যার মধ্যে সাতটিই সমগ্রেডে)। সমগ্রেডে চারটা জবও পেয়েছি, অভিজ্ঞতা বলে, সোনালী ব্যাংকের ঐ দুইটা পোস্টেও মেবি জব পেতাম, হয়তো জনতা ব্যাংক ও কম্বাইন্ড সিনিয়র অফিসার পদেও জব পাব ইনশা-আল্লাহ, যেহেতু সিট বেশি+পরীক্ষাও ভালো হয়েছিলো।... শুধু যে আমিই অনেকগুলা ভাইভা দিয়েছি, একাধিক জব পেয়েছি, ব্যাপারটা কিন্তু এমন না। যেহেতু একই সিলেবাসে পরীক্ষা, প্রতিযোগীরাও এক, পরীক্ষার ধরনও এক, তাই দেখা যেত ভাইভাতে ডাক পাওয়া ৬০-৭০% প্রার্থীই একাধিক ভাইভাতে সুযোগ পেয়েছে। এমনও হয়েছে যে এক ভাইভাতে পরিচিত হওয়া একজনের সাথে পরের ভাইভাতেই আবার দেখা হয়েছে। অনেকেই সমগ্রেডের দুইটা, তিনটা, চারটা-পাঁচটা পর্যন্ত ভাইভাতে ডাক পেয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে একাধিক চাকরিও পেয়েছে। আর কিছু প্রার্থী হয়তো সব পরীক্ষাতেই সামান্য ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় একটা জবও পায়নি। বিদ্যমান ব্যাংক নিয়োগ ব্যবস্থায় যে সমস্ত কমন সমস্যা উদ্ভুত হচ্ছে সেগুলো নিম্নরূপ_

১) একজন প্রার্থী একাধিক জব পাওয়ায় বাকি সিটগুলো খালি থাকছে, সেই সাথে অনেকের বেকারত্ব দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

২) একজনের হয়তো প্রথম পোস্টিং তার জন্যে সুবিধাজনক ছিলো না। জয়েন করার কিছুদিন পর সমগ্রেডে অন্য একটা জব হলো, এবং পোস্টিং টা ভালো জায়গায় হলো। দ্যান সে প্রথম জবটা ছেড়ে দ্বিতীয়টায় চলে গেলো। আর এর ফলে ছেড়ে আসা জবের সিট টা পরবর্তী সার্কুলারের আগ পর্যন্ত ফাঁকা হয়ে গেলো। কারন জবে ঢুকে ছেড়ে দিলে সেই সিট আর প্যানেল থেকে পূরণ করা যায় না। উল্লেখ্য, যদি কিছুদিনের মধ্যেই চাকরি পরিবর্তনের সুযোগ না থাকতো তবে এক-দুই বছর জব করার পর জুনিয়র হয়ে নতুন কোথাও সমগ্রেডে যেতে চাইতো না, এবং এভাবে সিটগুলো নষ্ট হতো না।

৩) রেজাল্টে সমন্বয়হীনতার জন্যে কিছু প্রবলেম ক্রিয়েট হচ্ছে। যেমন ধরা যাক, একজনের প্রথমে বিকেবির অফিসার-ক্যাশ এ জব হলো। সেখানে জয়েন করার কিছুদিন পর বিকেবির অফিসার এর প্যানেল থেকে ডাক পেলো, অথবা অন্য কোথাও অফিসার পদে নিয়োগ পেলো। আবার সেখানে জয়েন করার কিছুদিন পর কোন ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার প্যানেল থেকে ডাক পেলো, দ্যান অফিসার থেকে সিনিয়র অফিসার। এভাবে চক্রাকারে সিট নষ্ট হতেই থাকে। আমার সাথে যারা বিকেবিতে জয়েন করেছিলো, তাদের মধ্য থেকে এটলিস্ট.৪০% চলে যাবে জনতা ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার, আর সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে, নেক্সটে আরও যাবে। আর যারা জনতা ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে ঢুকবে তাদের ৮০% ই ইতঃমধ্যে কোথাও না কোথাও জব করে। সেই সিট গুলোও ফাঁকা হবার অপেক্ষায়।

৪) নরম্যালি যারা এগিয়ে থাকছে, তারা সব গুলা নিয়োগেই এগিয়ে থাকছে। কেউ কয়েকটা জব পাচ্ছে, আর কেউ সব পরীক্ষাতেই সামান্য ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় একটা জবও পাচ্ছে না। প্যানেলেও তাই হচ্ছে। এটা যে কতো বড় জটিলতা সৃষ্টি করছে সেটা লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে। চক্রাকারে সিট নষ্ট হচ্ছে, আর কিছু প্রার্থী জবই পাচ্ছে না।

৫) দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকায় এসে প্রতি সপ্তাহে পরীক্ষা দেয়া অনেক কষ্টের।

৬) শুধু যে চাকরি প্রার্থীরাই বঞ্চিত হচ্ছে তা নয়, বরং লোকবলের অভাবে ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। বছরব্যাপী নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রাখতে গিয়ে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে, প্রচুর সময় নষ্ট হচ্ছে। ঘন ঘন সুইচের ফলে ব্যাংকগুলোর জনবলের সেটআপ বার বার চেঞ্জ হচ্ছে।

এরকম আরও অনেক সমস্যা বলা যাবে, (বিভিন্ন গ্রুপে অনেক ভাই-বোনেরাও এ বিষয়ে লেখেন প্রায়ই) সমস্যা গুলোর অনেক ভেতরেও ঢোকা যাবে। কিন্তু স্ট্যাটাসটা আর বড় করতে চাই না।... এই যে এত এত সমস্যা, এর সমাধান কিন্তু খুব কঠিন কিছু নয়। আমরা যারা সমস্যা গুলো ফেস করছি, সমস্যা গুলো নিয়ে লেখছি, আমাদের কাছেও কিন্তু এসব সমস্যা সমাধানের কিছু সুপারিশ আছে, যা বিভিন্ন লেখায় উঠে আসে। তবে আমাদের বিচ্ছিন্ন ভাবনা গুলোকে সাজিয়ে একটা প্রপার প্লান-এর রূপ দেয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে এ বিষয়ে বসতে হবে, কমিটি করতে হবে, বিএসসির নিকট আনুষ্ঠানিক সুপারিশমালা পেশ করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। কর্তৃপক্ষকে মোটিভেটেড করতে হবে। সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের ঐকান্তিক ইচ্ছা, আন্তরিকতা, যথাযথ উদ্যোগ ও একটি সুন্দর পরিকল্পনাই পারে এই সমস্যার সমাধান করতে 🙂

লিখেছেন: Sheikh Muraduzzaman

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]