Get on Google Play

অনুপ্রেরণামুলক গল্প, বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী, ইতিবাচক আচার-আচারন ইত্যাদি
#1833
এই প্রশ্নের ৯৯% ক্ষেত্রে উত্তর হলো ভাই দেশে কি করুম? লাইফ সিকিউরিটি নাই, চাকরি নাই, জ্যামে জীবন কাহিল। লাইফ সিকিউরিটি আর জ্যাম নিয়া কোন দ্বিমত নাই তবে দেশে চাকরি নাই এই তথ্যটা সম্ভবত ভুল এবং কিছুটা মিথও। বহুদিন থেকেই সবাই শুনে আসতেছে যে দেশে চাকরি নাই কিন্তু বিডিজবসের মতো সাইটে গেলে দেখা যায় হাজার হাজার জব। আর কোন ফিল্ডের কথা জানি না তবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং লাইনে কেউ চাকরি নাই বইলা দেশ ছাড়তেছে শুনলে তারে আমি খুব ভদ্রভাষায় কিছু কথা জিজ্ঞাস করি।

প্রথম কথা হলো তুমি জব পাওয়ার জন্য কি করছো? কিভাবে কি করছো? কোন স্কিল ডেভেলপ করছো?

তুমি পাশ কইরা বের হইছো, এখনো ভালো কইরা সিভি লেখতে পারো নাই। তোমার একটা ভালো সিভি নাই এ্যাপ্লাই করার মতো। তুমি জানো না কিভাবে কাভার লেটার লেখা লাগে। কোনো বড়ভাই বা ইন্টারনেট থেইকা একখান কাভার লেটার স্যাম্পল নামাইছো; সেইটাই সবখানে দিচ্ছো কোম্পানির নাম চেঞ্জ কইরা। তোমার সিভি এডিট করার টাইম নাই, কাভার লেটার লেখার অবস্থা নাই; তোমারে কোম্পানি চাকরি দিবে কেন? তুমি খালি তোমার সিভি নিয়া ডিল করো, এইচআররা সারাদিন শত শত সিভি নিয়া ডিল করে, তারা ভুদাই না। একজন এফিশিয়েন্ট এইচআর একপলক দেখলেই বুঝতে পারে এই সিভিতে আসলে কি আছে বা কি থাকবে। তুমি এ্যাপ্লাই করো কিন্তু কোন অনলাইন প্রোফাইল/পোর্টফোলিও দাও না বা তোমার নাই। লিঙ্কডইনে তোমার প্রোফাইলে নাই, ডেভেলপার হইতে চাও কিন্তু গিটহাব বা স্ট্যাকওভারফ্লো'তে তোমার এ্যাকাউন্ট নাই, তুমি ভালো লেখো কিন্তু ফেসবুক ছাড়া তোমার কোনো ব্লগ বা অনলাইন প্রেজেন্স নাই। যে কোনো চাকরির জন্য তোমার কাভার লেটার সেইম, মোটিভেশন সেইম। এরমানে তুমি আসলে অদ্ভুত -_-

এতো গেলো এ্যাপ্লাই করার কাহিনী, এর আগেও কাহিনী আছে। ৪ বছর অনার্স পড়ছো, তোমার প্রেম করার সময় হইছে, বন্ধুবান্ধবের সাথে ঘোরার সময় হইছে কিন্তু কোনো প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপ হয় নাই। এমন না যে তুমি জানতা না কি শিখতে হবে। কিন্তু তুমি কি করছো? সিওর হওয়ার জন্য ১০ ভাইরে গিয়া জিগাইছো কি শিখুম। কেউ কইছে জাভা শিখলে আর কিছুর দরকার নাই, কেউ কইছে পিএইচপি শিখলে খালি চাকরি আর চাকরি, কেউ কইছে ডটনেট, ২/১জন হয়তো কইছে পাইথন বা রুবি। এতো মতামত নিয়া তুমি আসলে উলটা ফাপরে পরছো, কোনটা শিখবা আর কোনটা শিখবা না ডিসাইড করতে করতেই তোমার অনার্স শেষ হইয়া গেছে। হয়তো তুমি সিএসই পড়তে আইছো যতোটা না নিজের ইচ্ছায় তারচেয়ে বেশি 'বাপ/মা/ভাই চায় আমি ইঞ্জিনিয়ার হই' বইলা। প্রথম সেমিস্টারে আইসা একই জিনিস ১০ বার লেখার জন্য লুপ ঘুরানো(ctrl + c, ctrl +v বাদ দিয়া) আর ছোটহাতের ওয়ার্ডরে বড়হাতের ওয়ার্ডে কনভার্ট করার প্রোগ্রাম(ক্যাপস লক থাকতে এতো প্যারার দরকার কি!!) দেইখা তোমার মাথা গেছে ঘুইরা। তখন এক বড় ভাই কইছে প্রোগ্রামিং না পারলেও ব্যাপার না তুই নেটওয়ার্কিং নিয়া লাইগা পর, প্রচুর জব ঐখানে। তুমি ঝাপ দিয়া সিসিএনএ করছো, নানা লেভেল পার কইরা ৪ বছর পর যখন জব করতে গেছো তখন তোমার অনার্সের সার্টিফিকেটের চেয়ে সিসিএনএ সার্টিফিকেট বেশি কাজ দিছে। তোমার ৪ বছরের পরিশ্রমের চেয়ে ৬ মাসের কোর্সের পরিশ্রম যদি তোমাকে বেশি পে ব্যাক করে তাইলে সোজা কথায় তুমি আসলে সাড়ে তিন বছর নষ্ট করছো। তুমি বিবিএ পড়তে গেছো কিন্তু ডিসাইড করতে পারো নাই কি মেজর করবা। নানান বড়ভাই নানা অপশন কইছে, তুমি পরছো ফাপরে। ম্যাথ পারি না তাই এ্যাকাউন্টিং নিবো না, কথা কইতে পারই না ঠিকমতো তাই মার্কেটিং নিবো না, মানুষের সাথে কমিউনিকেশন স্কিল ভালো না তাই এইচআরএম এ যাবো না। তাইলে তুমি যাবা কই ভাই? বাসায় বইসা থাকো।

জীবন খুব ছোট, এইখানে তোমার অনেক এক্সপেরিমেন্ট করার উপায় নাই, এইটাই বাস্তবতা। অনার্স লাইফও ছোট কিন্তু সবচেয়ে ক্রুসিয়াল সময়। সার্বিকভাবে চিন্তা করলে ৪ বছর অনেক বড় সময় একটু একটু করে নিজেরে ডেভেলপ করার। এইটা তুমি হয়তো অনার্সে বুঝবা না, বুঝবা অনার্সের পরে যখন তোমার আর সেই সময়/সুযোগ কোনোটাই থাকবে না। তুমি একটা স্কিল বাইছা নাও এবং সেটায় ভালো করো। কোনো জিনিসে টাইম দিলে সেটা ভালো মতো হবেই, এইটা গ্যারান্টেড। আজকে যে কোড লিখতে তোমার ১ ঘণ্টা লাগতেছে, লাইগা থাকো, ১ বছর পর তুমি ১০ মিনিটে সেই কোড লিখতে পারবা। আজকে যে প্রেজেন্টেশনে গেলে তুমি ঘাইমা একাকার হচ্ছো, নিয়মিত আয়নার সামনে দাড়ায়ে প্রেজেন্টেশন প্র্যাকটিস করো, বছরখানেক পর তুমি এমন প্রেজেন্টেশন দিবা যে তালির চোটে কানে ঝাঁপা লাইগা যাবে। এইটা হবেই যদি তুমি লাইগা থাকো, মানুষের অসাধ্য কিছু নাই, তোমারও নাই। পার্থক্যটা খালি কতোটুকু চেষ্টা করলাম সেইটা, আর কিছু না!! কিন্তু সমস্যা হলো তুমি সেটা করবা না। তুমি এই পোষ্ট পড়বা, ৫/১০ মিনিট খুব চার্জড আপ থাকবা তারপরে টাইমলাইনের পরের পোষ্টে গেলেই তুমি সব ভুইলা যাবা। তোমার কাছে মনে হবে কারো সাথে 'গেম অফ থ্রোনস'র ব্যাপারে একটু আলোচনা করা দরকার, বিষয়টা জরুরি। অথবা তুমি যদি অলরেডি কোনও পীরের মুরিদ হও, যে হয়তো বিসিএস ক্যাডার বা কর্পোরেট বিগ শট যাদের লাখ লাখ ফলোয়ার, টেকা দিয়া তারা আসবে এমন অনুষ্ঠানে যাবা, তাদের নানান কথায়(সুশীল ভাষায় 'মোটিভেশনাল স্পিচ') বিভ্রান্ত হবা। এদের সবার রেজাল্ট খারাপ মানে তুমি রেজাল্ট ভালো করলে আসলে লুজার। এদের সবার আগের জীবন খুব কষ্টের মানে নরমাল মিডল ক্লাস লাইফ লিড করলে তুমি লুজার। ১ ঘণ্টার একটা স্পিচে এরা একবার বলবে 'ডু হোয়াট ইউ ওয়ান্ট', তার ৫ মিনিট পরেই আরেক উদাহরণে বলবে 'যা ইচ্ছা কইরো না, মাথা খাটাও'। এইগুলা শুইনা তুমি ডিসাইড করতে পারবা না আসলে কি করবা কিন্তু তুমি যেহেতু মুরিদ তাই 'মাই পীর ইজ অলওয়েজ রাইট' ভাইবা নিজেরেই দোষ দিবা, তোমারে দিয়ে কিছু হবে না ভাইবা হতাশ হবা।

সবচেয়ে বড় কথা হলো তোমার কথায় কথায় মোটিভেশন লাগে কেন? নিজেরে নিজে মোটিভেট না করতে পারলে কেউ তোমারে মোটিভেট করতে পারবে না। এইটা খুব রুড ট্রুথ এবং এইটা মাইনা নাও। তুমি কি করবা, কি করতে চাও এইটা তুমি ঠিক করবা। তোমারে যদি লোকের কথা শুইনা ঠিক করা লাগে যে কি পড়ুম, কি শিখুম তাইলে তো বিপদ। যে নিজের ক্যারিয়ার কোনদিকে নিবে, কি পড়বে সেইটা নিয়া কনফিউজড থাকে সে জীবনের বাকি সব বিষয়েও কনফিউজড থাকবে; এইটা ধইরা নেয়া যায়। তুমি সিনিয়রদের সাজেশান নিতে পারো কিন্তু ডিসিশান তোমারই নিতে হবে, এইটা যদি তুমি অন্য কারো কথা শুনে ঠিক করো তাহলে ঝামেলায় পড়বা। এক একজন তোমাকে এক একটা সাজেশান দিবে। দুইজন আলাদা সাজেশান দিচ্ছে মানে কিন্তু এদের একজন/সবাই ভুল তা না; এরা যার যার জায়গায় থেকে তোমাকে সাজেশান দিচ্ছে কিন্তু এদের চেয়ে তোমার অবস্থা/অবস্থান ভিন্ন হতে পারে, তোমাকে অন্যভাবে রিয়েক্ট করতে হতে পারে; সেটা তোমাকেই ঠিক করতে হবে। নিজের স্কিল কেউ ডেভেলপ করে দিবে না, ঐটাও নিজেকেই করতে হবে।

উপরে যে প্রশ্ন করছি সেটার সবচেয়ে অনেস্ট উত্তর দিছিলো এক ছোটভাই। ওর গার্লফ্রেন্ডের বাপ প্রবাসী ছেলে ছাড়া বিয়ে দিবে না তাই ও বিদেশ আয়তে চায়। আমি কইছি "ওকে তুই আয়!! তার আগে ব্রেকাপ কইরা আয়। এই মাইয়ারে বিয়ে করতে তোরে যে অবস্থায় গিয়া দাঁড়াইতে হবে এবং তাতে যে টাইম লাগবে ততদিনে তোর " -_- পোলা খুব দুঃখ পাইছিলো কথা শুইনা এবং ব্রেকাপ না কইরাই আসছিলো। কিন্তু আসার দেড় বছর পর আলটিমেটলি যা হওয়ার তাইই হইছে, ঐ মেয়ের আরেক 'প্রতিষ্ঠিত প্রবাসী' ছেলের সাথে বিয়ে হইছে। বিদেশে যে আসতে চাও তাতেও রক্ষা নাই রে মমিন, প্রতিষ্ঠিত হইতে হবে। কোন দেশে আছও সেটাও ব্যাপার। পোল্যান্ড থাকলে হবে না, জার্মানি থাকতে হবে। লুক্সেমবার্গ থাকলে হবে না, ফ্রান্স/সুইজারল্যান্ড/নেদারল্যান্ডস থাকতে হবে। যাবা কই? :/

জীবন/দুনিয়া কোনোটাই আল্লাহ দিলে কম দেখি নাই, ৭০% ইউরোপ ঘুরে ফেলা হইছে অলরেডি। এই বুকের উপর দিয়াও কম মাইয়া হাইটা যায় নাই; প্রথম গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে হইছে আমেরিকায়, দ্বিতীয়জনেরও, তৃতীয়জনের বিয়ে হইছে আমার সাথেই(এরেই কয় ব্যাডলাক! বেচারি!)। মোটিভেশনাল স্পিচ দেই না বইলা ভাইবো না এক্সপেরিয়েন্স নাই।

Collected

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]