- Mon Sep 07, 2020 2:59 pm#3205
বিদেশি শব্দ
বিদেশি শব্দের বানান পুরোটাই পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে। ‘আ’ না হয়ে ‘য়া’ হয় তবে ‘কোরআন’সহ কয়েকটি বানানে ‘আ’ লেখা হয়। শব্দের শেষে ‘হ’ বসে না তবে ‘আল্লাহ’ শব্দে বসানো হয়। ‘ঈ-ঊ’ না হয়ে ‘ই/উ’ হয়। ‘ঙ/ছ/ঞ্জ/ঞ্চ/ণ/ণ্ট/ ণ্ড/ষ্ট’ ইত্যাদির পরিবর্তে স/শ/নজ/নচ/ন/ন্ট/ন্ড/স্ট’ হয়। কিন্তু এখনও ‘ঙ/ছ/ঞ্জ/ ঞ্চ/ণ/ণ্ট/ ণ্ড/ষ্ট’ দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: চীন, লুঙ্গি, ডেঙ্গু, ঝাণ্ডা, ঠাণ্ডা, লণ্ঠন, মিছরি, পছন্দ, তীর (ধনুক), ইঞ্জিনিয়ার, সেঞ্চুরী, বাঙ্কার, খ্রিষ্টার্ন, যিশু ইত্যাদি। সকল প্রাদেশিক ও বিদেশি শব্দে ঈ-কার না বসে ই-কার বসে। যেমন: শুমারি, আমদানি, খানদানি, খুশকি, খুশি, বন্দি, , জমি, জামদানি, জিন্দাবাদ, জিন্দেগি, দরজি, দাগি, বিরিয়ানি, মুরগি, আবির, আমিন, আসামি, গরিব, কেরানি, দাদি, নানি, চাচি, মাসি, ভাবি, কাহিনি, কোম্পানি, জানুয়ারি। এখনও লেখা হচ্ছে : জঙ্গি, জিঞ্জির, সেঞ্চুরি, চৌধুরী। চীন, লুঙ্গি, ডেঙ্গু, ঝাণ্ডা, ঠাণ্ডা, লণ্ঠন, মিছরি, পছন্দ, তীর (ধনুক), ইঞ্জিনিয়ার, সেঞ্চুরী, বাঙ্কার, খ্রিষ্ট, খ্রিষ্টার্ন, যিশু।
পারিভাষিক শব্দ
রূপ, রস, গন্ধ, কাজ অনুসারে বিশেষ অর্থ প্রকাশের জন্য ইংরেজি শব্দ অনুবাদ করা হয়। এসব শব্দের বানান উৎপত্তিগত ও গঠনগত হতে পারে। যেমন : সিলেবাস—পাঠ্যসূচি, আইন—অ্যাক্ট, অক্সিজেন—অম্ল।
শব্দের গঠনগত বানান
সাধারণত গঠনগত বানান সব সময়ই অপবির্তনশীল। সন্ধি, সমাস, প্রত্যয়, উপসর্গ, বিভক্তি, শব্দদ্বিত্ব, বচন, নির্দেশক, শব্দ রূপান্তর ইত্যাদির অনুসারে বানান নির্ধারণ হতে পারে। যেমন:
সন্ধি
বর্ণের মিলনে, বর্ণে বিকৃতিতে বা বর্ণ লোপে শব্দের বানান সঠিক করা যায়। যেমন :
*ঈ, ঊ, উৎ—জ্জ/জ্জ্ব, ঃ—র/ষ ইত্যাদি নিয়মে সন্ধিজাত শব্দ হয়। যেমন: রবীন্দ্র (বরি +ইন্দ্র), কটূক্তি (কটু+উক্তি), অহরহ (আহঃ+অহ), আবিষ্কার, পুরস্কার, উৎ+চারণ=উচ্চারণ, অতঃ+ এব= অতএব, উৎ+স্থান=উত্থান, ইতি+ মধ্যে = ইতোমধ্যে।
*নিয়মহীনভাবে সন্ধিজাত শব্দ হতে পারে। যেমন : এক+দশ=একাদশ, গো+অক্ষ= গবাক্ষ ইত্যাদি।
সন্ধি শব্দ গঠনের শক্তিশালী মাধ্যম তবে সংস্কৃত ও সংস্কৃত শব্দে সন্ধি করতে হয়। সংস্কৃত ও বাংলা শব্দের সন্ধি হয় না। উচ্চারণে সুবিধা করতে গিয়ে শব্দকে অশুদ্ধ করা ঠিক নয়। সন্ধির নিয়মে বাক্য শুদ্ধতা রজায় রাখা যায়। যেমন : অর্থাভাবে—অর্থ অভাবে, লজ্জাস্কর—লজ্জা কর/লজ্জাজনক, দুরাবস্থা—দুরবস্থা, উল্লে¬খিত—উল্লি¬খিত, উপরুক্ত/উপরোক্ত— উপরিউক্ত, সম্বর্ধনা— সংবর্ধনা, কিম্বা—কিংবা, ইতিমধ্যে—ইতোমধ্যে ইত্যাদি।
বর্ণ রূপান্তরিত বানান
ধ্বনি বা বর্ণের পরিবর্তনগুলো লক্ষ করা যায় :
১. স্বরাগম : প্রথম বা মাঝে স্বরে ব্যঞ্জনের আগমন ঘটে। যেমন : স্কুল>ইস্কুল, কর্ম> করম।
২. স্বর সংগতি : স্বরের সংগতি রেখে স্বরের আগমন ঘটে। যেমন : রুপা>রুপো, শিয়াল >শেয়াল।
৩. অপিনিহিতি : মাঝে ই যোগ হয়। যেমন : ডাল>ডাইল, চাইল, কাইল, আইজ ।
৪. অভিশ্রুতি : মাঝে ই যোগ হয়। যেমন : কন্যা>কইন্যা>কনে, আজি> আইজ>আজ।
৫. সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : মধ্যধ্বনি লোপ পায়। যেমন : উদ্ধার>উধার, রাত্রি> রাতি।
৬. অন্তর্হতি : মধ্যধ্বনি বাদ যায়। যেমন : ফাল্গুন>ফাগুন, বাহির>বার।
৭. ব্যঞ্জনচ্যুতি : মধ্য বা শেষ ধ্বনি বাদ যায়। যেমন: বড়দাদা>বড়দি, ছোটদি/ ছোটদা।
৮. ধ্বনি বিপর্যয় : মধ্যধ্বনির পরিবর্তন হয়। যেমন : রিকশা>রিশকা, পিশাচ>পিচাশ, সচেতন >সতেচন, লাফ>ফাল।
৯. বিষমীভবন : র ও ল এর বিপর্যয় ঘটে। যেমন : শরীর>শরীল, লাল>নাল।
১০. ব্যঞ্জন বিবৃতি : নতুন ব্যঞ্জনবর্ণ বসে। যেমন : কবাট>কপাট, ধাইমা> দাইমা।
১১. অসমীকরণ : মাঝে আ-কারের আগমন ঘটে। যেমন : টপটপ> টপাটপ।
১২. সমীভবন : শেষে বর্ণ দ্বিত্ব হয়। যেমন : পদ্ম>পদ্দ, গল্প>গপ্প।
১৩. দ্বিত্ব ব্যঞ্জন : মাঝে দ্বিত্ব ব্যঞ্জনবণের্র আগমন ঘটে। যেমন : সকাল>সক্কাল, ছোট> ছোট্ট, কিছু>কিচ্ছু।
১৪. র—লোপ পায়: রেফ, ই-কার ও ‘হ’ উঠে দ্বিত্ববর্ণ বসে। যেমন: তর্ক>তক্ক, গৃহিণী> গিন্নি।
১৫. হ—লোপ পায় : হ-লোপ পেয়ে ই বা য় বসে। যেমন : মহাশয়>মশাই, চাহে> চায়।
১৬. অ—শ্রুতি : মাঝের য় উঠে যায়। যেমন : মায়ের>মার।
১৭. অন্তস্থ-ব শ্রুতি : মাঝের ও উঠে যায়। যেমন : নেওয়া>নেয়া, দেওয়া>দেয়া।
সমাস
সমাস অর্থ সংক্ষেপ বা মিলন। পরস্পর অর্থবোধক দুই বা অধিক শব্দ বা পদের মিলনকে সমাস বলে। পাশাপাশি দুই বা তার অধিক শব্দ বা পদ থাকতে হবে, এসব শব্দ বা পদের মধ্যে অর্থসংগতি থাকতে হবে, এসব শব্দ বা পদের মধ্যে বৃহৎ শব্দ বা পদ তৈরির যোগ্যতা থাকতে হবে, নতুন শব্দ বা পদ গঠন করার ক্ষমতা থাকতে হবে, একাধিক শব্দ বা পদকে সংকোচিত করার ক্ষমতা থাকতে হবে, শব্দ বা পদগুলোর বিভক্তি লোপ পেতে হবে, গঠিত শব্দ একশব্দ অথবা মাঝে হাইফেনযুক্ত হবে। এসব বৈশিষ্ট্য নিয়ে গঠিত হয় সেগুলোই সমাস।
শব্দ সংক্ষেপণের মাধ্যমে বানান সঠিক করা যায়। যেমন :
*বিশেষ্য-বিশেষ্য বা বিশেষণ সমাসের নিয়মে একশব্দ হয়। যেমন : ছেলেমেয়ে, ছাত্রছাত্রী, ভাইবোন, বড়দিদি, বড়ভাই ইত্যাদি।
*আলাদা অথবা হাইফেন অথবা একসাথে লেখা হচ্ছে। যেমন : তাছাড়া, এজন্য, এক্ষেত্রে, সেই, তাই।
*সমামবদ্ধ কিন্তু ঈ-কার দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন : কীভাবে, কীসের, কীরূপ, কীজন্য, নারীচিহ্ন, পথিবীব্যাপি, নদীমাতৃক ইত্যাদি।
*সমামবদ্ধ কিন্তু ই-কার দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: প্রাণিজগৎ, প্রাণিবিদ্যা, মন্ত্রিসভা ইত্যাদি।
*হাইফেন বা শব্দযোজকচিহ্ন দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: নারী-চিহ্ন, পৃথিবী-ব্যাপি, নদী-মাতৃক ইত্যাদি।
সমাসযোগে শব্দ গঠিত হলে এদের বানান তেমন পরিবর্তন না হলেও শুধু মাঝের ঈ-কার ইকারে পরিণত হয়। যেমন: প্রাণিজগৎ, প্রাণিবিদ্যা, নারিচিহ্ন, মন্ত্রিসভা। আবার শব্দযোজকচিহ্ন (হাইফেন) দিন বা না দিয়েও লেখা যায়। যেমন: ছেলে ও মেয়ে/ছেলেমেয়ে, কুসুমের মতো কোমল/ কুসুমকোমল, মন রূপ মাঝি/মনমাঝি, শহিদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত মিনার/শহিদমিনার।
*‘স্ব’ অর্থ নিজের আর ‘সহ’ অর্থ সাথে। যেমন : স্বজাতি হলো নিজের জাতি আর সজাতি হলো জাতিসহ।
*দুটি শব্দে বিভক্তি, নির্দেশক, প্রত্যয় (ই/ঈ/ইতা-প্রত্যয় বাদে), সন্ধি, উপসর্গ যোগ করলে বানানের এমন কী বর্ণের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন : নারীকে, নারীতে, নারীটি, নারীগুলো, নারীগণ।
*বনজ—যা বনে জন্মে সমাসের নিয়ম অনুসারে লেখা যায়। কিন্তু ‘ফলজ’ ভুল ব্যবহার। এটির সঠিক ব্যবহার হলো ‘ফলদায়ী গাছ’।
সংগৃহীত:-
বিদেশি শব্দের বানান পুরোটাই পরিবর্তিত রূপ ধারণ করে। ‘আ’ না হয়ে ‘য়া’ হয় তবে ‘কোরআন’সহ কয়েকটি বানানে ‘আ’ লেখা হয়। শব্দের শেষে ‘হ’ বসে না তবে ‘আল্লাহ’ শব্দে বসানো হয়। ‘ঈ-ঊ’ না হয়ে ‘ই/উ’ হয়। ‘ঙ/ছ/ঞ্জ/ঞ্চ/ণ/ণ্ট/ ণ্ড/ষ্ট’ ইত্যাদির পরিবর্তে স/শ/নজ/নচ/ন/ন্ট/ন্ড/স্ট’ হয়। কিন্তু এখনও ‘ঙ/ছ/ঞ্জ/ ঞ্চ/ণ/ণ্ট/ ণ্ড/ষ্ট’ দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: চীন, লুঙ্গি, ডেঙ্গু, ঝাণ্ডা, ঠাণ্ডা, লণ্ঠন, মিছরি, পছন্দ, তীর (ধনুক), ইঞ্জিনিয়ার, সেঞ্চুরী, বাঙ্কার, খ্রিষ্টার্ন, যিশু ইত্যাদি। সকল প্রাদেশিক ও বিদেশি শব্দে ঈ-কার না বসে ই-কার বসে। যেমন: শুমারি, আমদানি, খানদানি, খুশকি, খুশি, বন্দি, , জমি, জামদানি, জিন্দাবাদ, জিন্দেগি, দরজি, দাগি, বিরিয়ানি, মুরগি, আবির, আমিন, আসামি, গরিব, কেরানি, দাদি, নানি, চাচি, মাসি, ভাবি, কাহিনি, কোম্পানি, জানুয়ারি। এখনও লেখা হচ্ছে : জঙ্গি, জিঞ্জির, সেঞ্চুরি, চৌধুরী। চীন, লুঙ্গি, ডেঙ্গু, ঝাণ্ডা, ঠাণ্ডা, লণ্ঠন, মিছরি, পছন্দ, তীর (ধনুক), ইঞ্জিনিয়ার, সেঞ্চুরী, বাঙ্কার, খ্রিষ্ট, খ্রিষ্টার্ন, যিশু।
পারিভাষিক শব্দ
রূপ, রস, গন্ধ, কাজ অনুসারে বিশেষ অর্থ প্রকাশের জন্য ইংরেজি শব্দ অনুবাদ করা হয়। এসব শব্দের বানান উৎপত্তিগত ও গঠনগত হতে পারে। যেমন : সিলেবাস—পাঠ্যসূচি, আইন—অ্যাক্ট, অক্সিজেন—অম্ল।
শব্দের গঠনগত বানান
সাধারণত গঠনগত বানান সব সময়ই অপবির্তনশীল। সন্ধি, সমাস, প্রত্যয়, উপসর্গ, বিভক্তি, শব্দদ্বিত্ব, বচন, নির্দেশক, শব্দ রূপান্তর ইত্যাদির অনুসারে বানান নির্ধারণ হতে পারে। যেমন:
সন্ধি
বর্ণের মিলনে, বর্ণে বিকৃতিতে বা বর্ণ লোপে শব্দের বানান সঠিক করা যায়। যেমন :
*ঈ, ঊ, উৎ—জ্জ/জ্জ্ব, ঃ—র/ষ ইত্যাদি নিয়মে সন্ধিজাত শব্দ হয়। যেমন: রবীন্দ্র (বরি +ইন্দ্র), কটূক্তি (কটু+উক্তি), অহরহ (আহঃ+অহ), আবিষ্কার, পুরস্কার, উৎ+চারণ=উচ্চারণ, অতঃ+ এব= অতএব, উৎ+স্থান=উত্থান, ইতি+ মধ্যে = ইতোমধ্যে।
*নিয়মহীনভাবে সন্ধিজাত শব্দ হতে পারে। যেমন : এক+দশ=একাদশ, গো+অক্ষ= গবাক্ষ ইত্যাদি।
সন্ধি শব্দ গঠনের শক্তিশালী মাধ্যম তবে সংস্কৃত ও সংস্কৃত শব্দে সন্ধি করতে হয়। সংস্কৃত ও বাংলা শব্দের সন্ধি হয় না। উচ্চারণে সুবিধা করতে গিয়ে শব্দকে অশুদ্ধ করা ঠিক নয়। সন্ধির নিয়মে বাক্য শুদ্ধতা রজায় রাখা যায়। যেমন : অর্থাভাবে—অর্থ অভাবে, লজ্জাস্কর—লজ্জা কর/লজ্জাজনক, দুরাবস্থা—দুরবস্থা, উল্লে¬খিত—উল্লি¬খিত, উপরুক্ত/উপরোক্ত— উপরিউক্ত, সম্বর্ধনা— সংবর্ধনা, কিম্বা—কিংবা, ইতিমধ্যে—ইতোমধ্যে ইত্যাদি।
বর্ণ রূপান্তরিত বানান
ধ্বনি বা বর্ণের পরিবর্তনগুলো লক্ষ করা যায় :
১. স্বরাগম : প্রথম বা মাঝে স্বরে ব্যঞ্জনের আগমন ঘটে। যেমন : স্কুল>ইস্কুল, কর্ম> করম।
২. স্বর সংগতি : স্বরের সংগতি রেখে স্বরের আগমন ঘটে। যেমন : রুপা>রুপো, শিয়াল >শেয়াল।
৩. অপিনিহিতি : মাঝে ই যোগ হয়। যেমন : ডাল>ডাইল, চাইল, কাইল, আইজ ।
৪. অভিশ্রুতি : মাঝে ই যোগ হয়। যেমন : কন্যা>কইন্যা>কনে, আজি> আইজ>আজ।
৫. সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ : মধ্যধ্বনি লোপ পায়। যেমন : উদ্ধার>উধার, রাত্রি> রাতি।
৬. অন্তর্হতি : মধ্যধ্বনি বাদ যায়। যেমন : ফাল্গুন>ফাগুন, বাহির>বার।
৭. ব্যঞ্জনচ্যুতি : মধ্য বা শেষ ধ্বনি বাদ যায়। যেমন: বড়দাদা>বড়দি, ছোটদি/ ছোটদা।
৮. ধ্বনি বিপর্যয় : মধ্যধ্বনির পরিবর্তন হয়। যেমন : রিকশা>রিশকা, পিশাচ>পিচাশ, সচেতন >সতেচন, লাফ>ফাল।
৯. বিষমীভবন : র ও ল এর বিপর্যয় ঘটে। যেমন : শরীর>শরীল, লাল>নাল।
১০. ব্যঞ্জন বিবৃতি : নতুন ব্যঞ্জনবর্ণ বসে। যেমন : কবাট>কপাট, ধাইমা> দাইমা।
১১. অসমীকরণ : মাঝে আ-কারের আগমন ঘটে। যেমন : টপটপ> টপাটপ।
১২. সমীভবন : শেষে বর্ণ দ্বিত্ব হয়। যেমন : পদ্ম>পদ্দ, গল্প>গপ্প।
১৩. দ্বিত্ব ব্যঞ্জন : মাঝে দ্বিত্ব ব্যঞ্জনবণের্র আগমন ঘটে। যেমন : সকাল>সক্কাল, ছোট> ছোট্ট, কিছু>কিচ্ছু।
১৪. র—লোপ পায়: রেফ, ই-কার ও ‘হ’ উঠে দ্বিত্ববর্ণ বসে। যেমন: তর্ক>তক্ক, গৃহিণী> গিন্নি।
১৫. হ—লোপ পায় : হ-লোপ পেয়ে ই বা য় বসে। যেমন : মহাশয়>মশাই, চাহে> চায়।
১৬. অ—শ্রুতি : মাঝের য় উঠে যায়। যেমন : মায়ের>মার।
১৭. অন্তস্থ-ব শ্রুতি : মাঝের ও উঠে যায়। যেমন : নেওয়া>নেয়া, দেওয়া>দেয়া।
সমাস
সমাস অর্থ সংক্ষেপ বা মিলন। পরস্পর অর্থবোধক দুই বা অধিক শব্দ বা পদের মিলনকে সমাস বলে। পাশাপাশি দুই বা তার অধিক শব্দ বা পদ থাকতে হবে, এসব শব্দ বা পদের মধ্যে অর্থসংগতি থাকতে হবে, এসব শব্দ বা পদের মধ্যে বৃহৎ শব্দ বা পদ তৈরির যোগ্যতা থাকতে হবে, নতুন শব্দ বা পদ গঠন করার ক্ষমতা থাকতে হবে, একাধিক শব্দ বা পদকে সংকোচিত করার ক্ষমতা থাকতে হবে, শব্দ বা পদগুলোর বিভক্তি লোপ পেতে হবে, গঠিত শব্দ একশব্দ অথবা মাঝে হাইফেনযুক্ত হবে। এসব বৈশিষ্ট্য নিয়ে গঠিত হয় সেগুলোই সমাস।
শব্দ সংক্ষেপণের মাধ্যমে বানান সঠিক করা যায়। যেমন :
*বিশেষ্য-বিশেষ্য বা বিশেষণ সমাসের নিয়মে একশব্দ হয়। যেমন : ছেলেমেয়ে, ছাত্রছাত্রী, ভাইবোন, বড়দিদি, বড়ভাই ইত্যাদি।
*আলাদা অথবা হাইফেন অথবা একসাথে লেখা হচ্ছে। যেমন : তাছাড়া, এজন্য, এক্ষেত্রে, সেই, তাই।
*সমামবদ্ধ কিন্তু ঈ-কার দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন : কীভাবে, কীসের, কীরূপ, কীজন্য, নারীচিহ্ন, পথিবীব্যাপি, নদীমাতৃক ইত্যাদি।
*সমামবদ্ধ কিন্তু ই-কার দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: প্রাণিজগৎ, প্রাণিবিদ্যা, মন্ত্রিসভা ইত্যাদি।
*হাইফেন বা শব্দযোজকচিহ্ন দিয়ে লেখা হচ্ছে। যেমন: নারী-চিহ্ন, পৃথিবী-ব্যাপি, নদী-মাতৃক ইত্যাদি।
সমাসযোগে শব্দ গঠিত হলে এদের বানান তেমন পরিবর্তন না হলেও শুধু মাঝের ঈ-কার ইকারে পরিণত হয়। যেমন: প্রাণিজগৎ, প্রাণিবিদ্যা, নারিচিহ্ন, মন্ত্রিসভা। আবার শব্দযোজকচিহ্ন (হাইফেন) দিন বা না দিয়েও লেখা যায়। যেমন: ছেলে ও মেয়ে/ছেলেমেয়ে, কুসুমের মতো কোমল/ কুসুমকোমল, মন রূপ মাঝি/মনমাঝি, শহিদদের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত মিনার/শহিদমিনার।
*‘স্ব’ অর্থ নিজের আর ‘সহ’ অর্থ সাথে। যেমন : স্বজাতি হলো নিজের জাতি আর সজাতি হলো জাতিসহ।
*দুটি শব্দে বিভক্তি, নির্দেশক, প্রত্যয় (ই/ঈ/ইতা-প্রত্যয় বাদে), সন্ধি, উপসর্গ যোগ করলে বানানের এমন কী বর্ণের কোনো পরিবর্তন হয় না। যেমন : নারীকে, নারীতে, নারীটি, নারীগুলো, নারীগণ।
*বনজ—যা বনে জন্মে সমাসের নিয়ম অনুসারে লেখা যায়। কিন্তু ‘ফলজ’ ভুল ব্যবহার। এটির সঠিক ব্যবহার হলো ‘ফলদায়ী গাছ’।
সংগৃহীত:-